এক ধাক্কায় এতো সম্পদ হারাননি আর কেউ

সুপ্রভাত ডেস্ক »

‘আধুনিক বিশ্বের ইতিহাসে’ এটাই সম্ভবত সবচেয়ে বড় আকারের সম্পদ হ্রাসের ঘটনা। ব্লুমবার্গ বিলিয়নেয়ার্স ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালের নভেম্বর মাস থেকে এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩ মাসে নিজের নেট সম্পদের অর্ধেকের বেশি খুইয়েছেন গেল বছরে বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবেরের তকমা পাওয়া ইলন মাস্ক। অন্যদিকে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, গত ১৩ মাসে মাস্কের নেট সম্পদ কমেছে ২০ হাজার আটশ কোটি ডলার যা গ্রিসের জিডিপির প্রায় সমান। বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর সিংহাসন দখলে রেখেছেন যে বের্নান্ড আর্নো, তার নেট সম্পদের চেয়েও বেশি সম্পদ খুইয়েছেন ইলন মাস্ক। খবর বিডিনিউজ।

২০২২ সালের প্রায় পুরোটা জুড়েই বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় এক নম্বরে ছিলেন মাস্ক। কিন্তু ডিসেম্বর মাসে এসে সেই সিংহাসন খুইয়েছেন ফেনডি, ক্রিশ্চিয়ান ডিওর এবং সেফোরার মত বেশ কিছু বিলাসবহুল ব্র্যান্ডের মূল কোম্পানি এলভিএমএইচ-এর প্রধান নির্বাহী বের্নার্ড আর্নোর কাছে।

২০২১ নভেম্বরে ইলন মাস্কের সম্পদের আকার ছিল ৩৩ হাজার ৮০০ কোটি ডলার। বাণিজ্য প্রকাশনা ব্লুমবার্গ বলছে, মাস্কের এই বিপুল সম্পদের মূলে ছিল টেসলার সাফল্য।

কিন্তু এক বছরের ব্যবধানে পাল্টে গেছে সে দৃশ্যপট। চীনের কারখানায় উৎপাদন বিলম্ব, সারাইয়ের জন্য বিক্রিত যানবাহন ফেরত আনা, এবং মাস্ক টুইটার কিনতে গিয়ে টেসলার ওপর মনোযোগ হারিয়েছেন – বিনিয়োগকারীদের এমন শঙ্কার সমন্বয়ে গত এক বছরের শেয়ার বাজারে টেসলা শেয়ারের দর কমেছে ৭০ শতাংশ।

আর ২০২১ সালের নভেম্বর মাসের পর থেকে এক বছরের ৯০ হাজার কোটি ডলারের বাজার মূলধন হারিয়েছে টেসলা। এর ফলে টেসলা বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান ১০ কোম্পানির তালিকা থেকেও বাদ পড়েছে বলে জানিয়েছে দ্য ইনডিপেনডেন্ট।

তবে, শেয়ার বাজারে দরপতনেরর পরেও টেসলা এখন বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
আর এতোকিছুর পরেও টেসলা নিয়ে আশাবাদী মাস্ক। সম্প্রতি কোম্পানির কর্মীদের উদ্দেশ্যে পাঠানো এক ইমেইলে তিনি বলেছেন, ভবিষ্যতে ‘টেসলা বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানিতে পরিণত হবে’ বলে বিশ্বাস করেন তিনি। শেয়ার বাজারের পাগলামিতে বিচলিত হবেন না। আমরা আমাদের সেরা পারফর্মেন্স অব্যাহত রাখলে বাজারও তা চিনে নেবে,” টেসলা কর্মীদের বলেছেন মাস্ক।

আপনাদের প্রশ্ন তোলা উচিত যে আমি অর্থসম্পদ কেন চাই। আমার সম্পদের অর্ধেক হচ্ছে পৃথিবীর নানা সমস্যা সমাধানের জন্য। আর বাকি অর্ধেক হচ্ছে মঙ্গলে একটি স্বনির্ভর শহর নির্মাণের জন্য যেন তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লাগলে বা ডায়নোসররা বিলুপ্ত হয়েছিল যে গ্রহাণুর আঘাতে, তেমন কিছু আবার হলে জীবন যেন টিকে থাকতে পারে।

চলতি বছর কেবল ইলন মাস্কের জন্যই খারাপ গেছে– এমনটা নয়। গত এক বছরে প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ ধনকুবেরদের সবারই সম্পদের আকার কমেছে বলে জানিয়েছে ইনডিপেনডেন্ট। জানুয়ারি মাসের পর থেকে মোট ১৮ হাজার কোটি ডলারের সম্পদ খুইয়েছেন মাইক্রোসফটের বিল গেটস, অ্যামাজনের জেফ বেজোস এবং গুগলের ল্যারি পেইজ।