ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিন রেলের শিডিউল বিপর্যয়

হুমাইরা তাজরিন »

ঈদযাত্রা আনন্দময় ও নিরাপদ করতে অনেকের পছন্দ রেল ভ্রমণ। বিষয়টি আমলে নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষ প্রতিবছরের মতো এবারও বাড়তি বগি ও দুইটি রেল সংযোজন করে। সেই সাথে ঈদের পর চালু করার কথা থাকলেও ১৬ এপ্রিল কুমিল্লার হাসানপুরে সোনার বাংলা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কারণে তড়িঘড়ি করে এবার কোরিয়া থেকে আনা একদম নতুন একটি রেল ১৭ এপ্রিল যুক্ত করেছে সোনার বাংলা সার্ভিসে। কিন্তু রেলটি ছাড়তে দেরি হওয়ায় যাত্রীদের ভোগান্তি ছিলো লক্ষণীয়। প্রায় ৫৫ মিনিট দেরি করে ছাড়ার কারণ হিসেবে তেমন কিছু জানাতে পারেনি রেল সংশ্লিষ্টরা। তবে ঢাকা থেকে আসা নতুন ট্রেনের সবকিছু চট্টগ্রামে পুনরায় দেখভালের কারণেই দেরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ব্যবস্থাপক রতন কুমার চৌধুরী।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটায় রেলস্টেশনে দেখা যায়, ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিন রেল ছাড়ার অপেক্ষায় বসে আছে সোনার বাংলার যাত্রীরা। অবশেষে বিকেল ৫টার ট্রেন ছাড়লো ৫টা ৫৫ মিনিটে। ৫৫ মিনিট টানা বসে থাকার কারণে ধৈর্য্যের বাঁধ ভেঙেছে যাত্রীদের। অধিকাংশ যাত্রীকে এ সময় রেলের সামনে পায়চারি করে সময় কাটাতে দেখা গেছে। নতুন ট্রেনের দরজা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ ও খোলার বিষয়টি না জানার কারণে অনেক যাত্রী তাদের নির্ধারিত আসন ছেড়ে বাইরে গিয়ে অপেক্ষা করেন। কিন্তু কোনো ঘোষণা না দিয়ে চেকআপে থাকা ট্রেন ছাড়ার পূর্ণ প্রস্তুতি নিলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেক যাত্রী বাইরে থেকে যান। এ সময় বিভিন্ন চেষ্টার পরও দরজা না খুললে ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের দরজা দিয়ে যাত্রীদের প্রবেশ করতে দেখা যায়।

এ ব্যাপারে আশরাফুল ইসলাম নামে একজন যাত্রী বলেন, ‘এটা নতুন ট্রেন। আমরা তো এটার সিস্টেম জানিনা। প্রায় ১ ঘণ্টার কাছাকাছি লেট হচ্ছিলো দেখে ভেতরে দম বন্ধ লাগার উপক্রম হওয়ায় এক পর্যায়ে বের হয়েছিলাম। কিন্তু দরজা বন্ধ হয়ে গেল। কর্তব্যরত পুলিশ বা রেলের ভেতরের কেউ দরজা খুলতে পারলেন না। তাই বাধ্য হয়ে জানলা দিয়ে ট্রেনে প্রবেশ করলাম।’

সোনার বাংলা এক্সপ্রেস ৫টা ৫৫ মিনিটে অবশেষে ছেড়ে যায়। এছাড়া ১০টি ইন্টারসিটি ও ২টি চাঁদপুরের স্পেশাল ট্রেন ছেড়ে যায়।

সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আমান উল্লাহ আমান বলেন,‘ আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বরাবরের মতোই আছে। রেল মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের আরো অতিরিক্ত ২২ জন আনসার সদস্য দেওয়ার কথা ছিলো। তবে আমরা এখনও কাইকে পাইনি। এবার ঝুঁকি নিয়ে যাত্রার সুযোগ নেই, যেহেতু অনলাইনেই সবাই নির্ধারিত সিট আগেই পেয়েছে। যার কারণে ভিড়ও কম। ’

তিনি সোনার বাংলা এক্সপ্রেস সম্পর্কে বলেন, ‘আসলে আমাদের এভাবে ঝুঁকি নিয়ে জানলা দিয়ে প্রবেশ করার কোনো ঘটনা নজরে আসেনি। তাছাড়া ট্রেনটি নতুন। এ ট্রেনটি এখনই চালু করার কথা ছিলোনা। হুট করে এটি চালু করা হয়েছে।’

স্টেশন ম্যানেজার রতন কুমার বলেন, ‘এ ট্রেনটি গতকালও ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। ভোরে ফিরেছে। টাইগারপাসে সার্বিক তদারকির জন্য ছিলো। রেলের লাইন ক্লিয়ারসহ ,নতুন ট্রেনের সবকিছু পুনরায় তদারকিতে সঙ্গত কারণে দেরি হয়েছে। আর অটো লক দরজা হওয়ার কারণে যাত্রীরা যে বিড়ম্বনায় পড়েছেন সেটি নিয়ে কি করা যায় দেখা যাক। ’