ইতালিকে চূড়ায় তুলে মানচিনির কান্না-হাসি

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক :

টাইব্রেকার শেষ হওয়ার পরই রবের্তো মানচিনি যেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না, কী করবেন। উচ্ছ্বাসে ছুটোছুটি, সামনে যাকে পাওয়া যায় তাকে জড়িয়ে ধরা, ইতালির পতাকা গায়ে জড়িয়ে সদর্প বিচরণ কত কী! আবেগের চিরায়ত প্রকাশও দেখা গেল, যখন হৃদয়ের অনুভূতি ফুটে ওঠে চোখে। জয়ের পর ইতালি কোচের চোখ অশ্রুসজল। মুখের হাসিই বলে দিচ্ছিল, এটা সুখের কান্না। ইতালির ফুটবলকে তলানি থেকে শীর্ষে তোলার তৃপ্তি জল!

২০১৮ সালের মে মাসে যখন তিনি কোচের দায়িত্ব নেন, ইতালিয়ান ফুটবল তখন ডুবে আছে হতাশার আঁধারে। চার বার বিশ্বসেরার সাফল্যে রাঙা দেশটিই ৬০ বছরের মধ্যে প্রথমবার খেলতে পারেনি বিশ্বকাপে। বলা হচ্ছিল, ইতালির ফুটবল ইতিহাসের অন্ধকারতম অধ্যায়। সেই দুঃসময়েই হাল ধরে মানচিনি দলকে এগিয়ে নিলেন আলোর উৎসের দিকে। ক্রমে ইতালি ফিরল জয়ের ধারায়। মানচিনির সঙ্গে ইতালির চুক্তি ছিল ২০২০ পর্যন্ত। একটা শর্ত ছিল, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের বাছাইপর্ব উতরাতে পারলে বাড়তে মেয়াদ। মানচিনি সেই চ্যালেঞ্জ জিতে যান। তিন ম্যাচ বাকি রেখেই বাছাই ইউরোতে খেলা নিশ্চিত করে ইতালি। মেয়াদ বাড়ে ২০২২ পর্যন্ত। কিন্তু মানচিনি এতটুকুতেই তৃপ্ত হবেন কেন! তার কোচিংয়ে ইতালি হয়ে উঠল অপ্রতিরোধ্য। নিজেদের ইতিহাসের রেকর্ড অপরাজেয় যাত্রায় দল ছুটতে থাকল ইউরোপ সেরা হওয়ার অভিযানে। ফাইনালে রোববার ইংল্যান্ডকে তাদেরই আপন আঙিনা ওয়েম্বলিতে টাইব্রেকারে হারিয়ে যেন আপাতত যেন পূর্ণতা পেল ইতালির ঘুরে দাঁড়ানো পর্ব। ফাইনাল জয়ের পর মানচিনি ধরে আসা গলায় শোনালেন সেই কঠিন অভিযানে সফল হওয়ার তৃপ্তির গল্প।

‘অবিশ্বাস্য কিছু অর্জনের আবেগের প্রকাশ এটি। ছেলেদের উদযাপন করতে দেখে, গ্যালারিতে সমর্থকদের উল্লাস দেখে সুখের অনুভূতির প্রকাশ এটি। গত তিন বছরে যা কিছু আমরা করেছি, যতকিছুর ভেতর দিয়ে আমরা গিয়েছি বিশেষ করে, গত ৫০ দিনে যতটা কঠোর পরিশ্রম আমরা করেছি, এই সবকিছুর কারণেই এমন আবেগ।’

মানচিনি জানালেন, তার দল গুছিয়ে তোলা আর এই সাফল্য যাত্রায় মূল শক্তি ছিল দলীয় একতা আর পারস্পরিক বন্ধন।

‘আমরা পরস্পরের সঙ্গে দারুণ মানিয়ে নিয়েছি। কখনোই কোনো সমস্যা হয়নি, সেই কৃতিত্ব ফুটবলারদেরই প্রাপ্য। শুধু মাঠেই নয়, সেখানে তো তারা অসাধারণ করেছেই, কিন্তু মাঠের বাইরেও, আমরা দারুণ টিম স্পিরিট গড়ে তুলতে পেরেছি।’

‘ওরা এমন একটি বন্ধন গড়ে তুলেছে, যা সামনেও কখনোই ছিন্ন হবে না। এই সাফল্যের প্রতিশব্দ হয়ে থাকবে ওরা, কারণ পরস্পরের প্রতি ওদের শ্রদ্ধা ও সম্মান তীব্র।’

ইতালি এখন তাকিয়ে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে। বাছাইপর্বে নিজেদের গ্রুপে এখনও পর্যন্ত তিন ম্যাচের তিনটিই জিতেছে তারা। খবর বিডিনিউজের