আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কি মোশাররফ পরিবারেই থাকছে?

চট্টগ্রাম-১ মিরসরাই

রাজু কুমার দে, মিরসরাই »

সাতবারের সংসদ সদস্য, দুইবারের মন্ত্রী, ৫২ বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের। ৫২ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এই প্রথম তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নেননি। এমন খবর যখন উপজেলা জুড়ে প্রচার হয় তখনই শুরু হয় আলোচনা। কিন্তু তিনি না নিলেও মনোনয়ন নিয়েছেন মেঝো পুত্র চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহবুবুর রহমান রুহেল। এর আগেও আওয়ামী লীগের এই প্রবীণ নেতা পুত্র রুহেলের জন্য মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোশাররফের ওপরই আস্থা রেখেছিলেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এসে রুহেলকে নিয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার (২০ নভেম্বর) স্বয়ং নিজে উপস্থিত থেকে মাহবুব উর রহমান রুহেলের দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ। এর আগে ১৮ নভেম্বর দলীয় কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন রুহেল। ২০ নভেম্বর বাবা-ছেলে একসঙ্গে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার খবরটি চট্টগ্রামের রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে পিতার অবর্তমানে মিরসরাইয়ের আওয়ামী রাজনীতির অন্যতম নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করছেন মাহবুবুর রহমান রুহেল। দলীয় ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে পিতার অবর্তমানে রুহেল প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নেতাকর্র্মীদের উৎসাহ দিয়েছেন।

তাই ধারণা করা হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ মনোনয়ন না নেয়ায় পুত্র রুহেলের জন্য কাজ করবেন। যদিও গত ৫ অক্টোবর বারইয়ারহাটে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দলীয় মনোনয়ন যে পাবে তাকে সহযোগিতা করবেন বলে জানান ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা জানান, যদি দলীয় মনোনয়ন রুহেল পায় তাহলে আওয়ামী লীগের ক্ষমতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের পরিবারেই থাকছে। এছাড়া ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ যেহেতু আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সিনিয়র সদস্য রুহেল এমপি নির্বাচিত হলে এলাকায় আরও বেশি উন্নয়ন করা সহজ হবে।

রুহেল সর্ম্পকে জানতে চাইলে মিরসরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী বলেন, গত ২৬ বছর তিনি (রুহেল) বাবার সঙ্গে থেকে মিরসরাই উপজেলার ১৮টি দলীয় ইউনিটের ১৬২টি সাব ইউনিট নিয়ে কাজ করেছেন। বর্তমানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ রুহেলের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।

এদিকে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দাখিল করেছেন মিরসরাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিয়াজ মুর্শেদ এলিট, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া প্রমুখ।

মেজ ছেলে মাহবুব উর রহমান রুহেলের মনোনয়নপত্র নেওয়ার বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, রুহেল দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত রয়েছে। তার নিজের চেষ্টায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করেছে। সে (রুহেল) এমপি নির্র্বাচিত হলে মিরসরাইতে আমার অসমাপ্ত কাজগুলো তার দ্বারা শেষ করা সম্ভব হবে।