সুপ্রভাত স্পোর্টস ডেস্ক »
আনাই মগিনি মূলত একজন রাইটব্যাক। রক্ষণভাগ সামলিয়ে ওপরে উঠে গোল করতে পারাই তো অসাধারণ কাজ। রক্ষণভাগ থেকে ওভারল্যাপিং করে ওপরে উঠে ক্রস করতে পারেন। আবার সময়মতো নিচে নেমে রক্ষণভাগের দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে যান। তিনিই আনাই মগিনি। তাঁর একমাত্র গোলেই আজ ফাইনালে ভারতকে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
বুধবার সন্ধ্যায় কমলাপুরের বীর শ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দকে ১-০ গোলে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ম্যাচের একমাত্র গোলটি আসে আনাই মোগনির পা থেকে।
এর আগে এই ভারতকে এই একই ব্যবধানে হারিয়ে আসর শুরু করেছিল বাংলাদেশ। সেদিন ম্যাচের প্রায় শুরুতে গোল পেলেও এদিন অপেক্ষা করতে হয় ৮০ মিনিট পর্যন্ত।
সবচেয়ে বড় কথা পুরো আসরে একটি গোলও হজম করেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। অন্যদিকে গোল দিতে পেরেছে ২০টি। পুরো আসর জুড়েই দাপট দেখিয়ে শিরপা ঘরে তুলে নেয় মারিয়ারা।
কার্যত এদিন ম্যাচের প্রথম পাঁচ মিনিটই কিছুটা ভালো খেলতে পেরেছে ভারত। তখন পর্যন্ত ম্যাচ গুছিয়ে উঠতে পারেনি বাংলাদেশ। এরপর বাকি গল্পের পুরোটাই লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেই খেলতে থাকে দলটি।
তবে একের পর এক চেষ্টা করেও গোল পাচ্ছিল না বাংলাদেশের মেয়েরা। অ্যাটাকিং থার্ডে দুর্বলতা থাকলেও ভারতীয় রক্ষণও ছিল দেখার মতো। জমাট রক্ষণে তহুরাদের প্রায় আটকে দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেননি।
এদিন ম্যাচের ১৬তম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো বাংলাদেশ। ভারতীয় গোলরক্ষকের ভুলে প্রায় গোল পেয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। মারিয়া মান্ডার শট ধরতে গিয়ে গুবলেট করে ফেলেন ভারতীয় গোলরক্ষক আনশিকা। আলগা বল পেয়ে যান তহুরা। তার গড়ানো শট একেবারে গোললাইন থেকে ঠেকান নির্মলা দেবী।
২৫তম মিনিটে বাংলাদেশের বাধা হয়ে দাঁড়ায় বারপোস্ট। এবারও দূরপাল্লার শট। বল ধরতে গিয়ে ভুল করে ফেলেন ভারতীয় গোলরক্ষক। তার বাধা পেরুলেও বারপোস্টে লেগে ফিরে আসে আনাইর শট।
দ্বিতীয়ার্ধেই শুরুতেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় বারপোস্ট। এবার তহুরার শট। যদিও রেফারি অফসাইড ধরেছিলেন। তবে রিপ্লেতে দেখা গিয়েছে অনসাইডেই ছিলেন এ ফরোয়ার্ড। ১০ মিনিট পর আনাই মোগিনির ক্রস থেকে ভালো হেড নিয়েছিলেন সামসুন্নাহার। লক্ষ্যে থাকলে তখনই এগিয়ে যেতে পারতো তারা।
৬৩তম মিনিটে সুযোগ ছিল ভারতেরও। তবে লিন্ডা কমের হেড লাফিয়ে সহজেই লুফে নেন রূপনা চাকমা। ১১ মিনিট পর দূর থেকে চেষ্টা করেছিলেন মারিয়া। তবে লক্ষ্যে থাকেনি। পরের মিনিটে বল জালে জড়ায়। তবে জটলায় ফাউলের কারণে গোল পায়নি বাংলাদেশ।
অবশেষে ৮০তম মিনিটে ভাগু সঙ্গ দেয় বাংলাদেশের। দুর্দান্ত এক গোল পায় বাংলাদেশ। প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে ভারতীয় গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন আনাই মগিনি। উল্লাসে মাতে বাংলাদেশ।
এগিয়ে গিয়েও থেমে থাকেনি বাংলাদেশের মেয়েরা। ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টায় মাতে। তবে আর গোল হয়নি। শেষ পর্যন্ত আনাইর গোলই গড়ে দেয় ম্যাচের পার্থক্য। জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।