নিজস্ব প্রতিবেদক »
নগরের অভ্যন্তরীণ সড়কে দিনের বেলায় ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা মানছে না ট্রাকচালকরা। নগর জুড়েই দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ভারী যানবাহন। এতে যানজটের পাশাপাশি প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
জানা যায়, ট্রাফিক (উত্তর) বিভাগের আওতাধীন এলাকা বন্দরকেন্দ্রিক প্রধান সড়কসহ আন্তঃজেলা যোগাযোগের সড়ক ছাড়া বালুছড়া বিআরটিএ হতে অক্সিজেন, অক্সিজেন মোড় হতে ষোলশহর ২ নম্বর গেট, কাপ্তাই রাস্তার মাথা হতে বহদ্দারহাট বাস টামির্নাল, স্টেশন রোড, কদমতলী (নিচের অংশ) হতে, কর্ণফুলী নতুন ব্রিজ হতে বাকলিয়া ও কোতোয়ালি থানার মোড়, মাঝিরঘাট রোড হতে নিউ মার্কেট এবং নেওয়াজ হোটেল হতে সিটি কলেজ। এইসব সড়কে ভারী যানবাহন চলাচলের বন্ধের নির্দেশনা রয়েছে।
তাছাড়া প্রতিদিন সকাল আটটা হতে রাত এগারোটা পর্যন্ত পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লং-ভ্যাহিকেল, প্রাইম মুভারসহ অন্যান্য পণ্য ও মালবাহী যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে পুরোনো নির্দেশনা থাকলেও, এটি শুধুমাত্র কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ। বাস্তবে এর কোন প্রয়োগ নেই।
সিএমপি ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দিনের ৮টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নগরের আটটি রুটে ট্রাক চলাচল বন্ধের পুরোনো একটি নির্দেশনা ছিল। কিন্তু বর্তমান তা ১ ঘণ্টা কমিয়ে এনে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে জরুরি আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্য, পণ্য ও রপ্তানিযোগ্য পণ্য পরিবহনের জন্য চট্টগ্রাম চেম্বার এবং বিজিএমইএ’র ইস্যুকৃত স্টিকার লাগিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় চলাচলের নির্দেশনা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে আসা মইজ্জারটেক রোড হয়ে কর্ণফুলী নতুন ব্রিজ এলাকা দিয়ে নগরে দিনরাত ঢুকছে মালবাহী ট্রাক। এর মধ্যে অনুমোদনহীন ট্রাকচালকরা পুলিশকে নানাভাবে ম্যানেজ করতে দেখা যায়। এছাড়া কোতোয়ালী, ষোলশহর ২নম্বর গেট, বহদ্দারহাট বাস টামির্নাল, স্টেশন রোড, কদমতলী মোড়, বাকলিয়া ও কোতোয়ালি থানার মোড়, মাঝিরঘাট রোড হতে নিউ মার্কেট দিনের বেলায় অহরহ ট্রাক চলাচল করতে দেখা যায়। এছাড়া যত্রতত্র পার্কিং, মাল লোড-আনলোড করতে দেখা যায়। ফলে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে।
এ বিষয়ে সিএমপি ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এন এম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘বন্দর থেকে সদরঘাট হয়ে খাতুনগঞ্জ, নিউমার্কেট, সিটি কলেজ হয়ে লালদীঘিসহ বেশ কিছু এলাকাতে বিশেষ প্রয়োজনে দিনে ট্রাক চলাচলের নির্দেশনা রয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ তার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।’
সিএমপি পশ্চিম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার তারেক আহমেদ বলেন, ‘বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হওয়াতেই কিছু এলাকাতে অনুমোদিত ট্রাক চলছে। বিশেষ করে বন্দর থেকে সাগরপাড় রোড, বড়পুল থেকে নয়া বাজার হয়ে অলঙ্কার রোড, সাগরিকা রোড দিয়ে মনছুরাবাদ ব্রিজ পর্যন্ত ট্রাক চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। তবে আমরা অন্য এলাকাগুলোতে দিনের বেলায় ট্রাক যেন চলাচল করতে না পারে তার জন্য বিশেষ নজরদারি চালু রেখেছি।’
সিএমপি উত্তর বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার জয়নুল আবদীন বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশরা সবসময় দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। যেসব রোডে চলাচলের অনুমোদন নেই, সেখানে কোনো ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। তাছাড়া যানজট নিরসনে বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে রয়েছে বিশেষ নজরদারি। আমরা যদি সবাই যার যার অবস্থান থেকে ট্রাফিক আইন মেনে চলি, সমস্যা নিজ থেকেই সমাধান হয়ে যাবে। এসব বিষয়ে সচেতন হতে হবে চালক ও নাগরিকদের।