ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্য লুট রোধে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ

মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি-সুপ্রভাত

৯৫ কিলোমিটারে মাত্র পাঁচ ফাঁড়ি

নিজস্ব প্রতিনিধি, মিরসরাই :

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামের সিটি গেইট থেকে ফেনীর মহিপাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৯৫ কিলোমিটার এলাকায় রয়েছে হাইওয়ে পুলিশের মাত্র ৫টি পুলিশ ফাঁড়ি। দীর্ঘ এ এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ ফাঁড়ি না থাকায় মহাসড়কের পণ্য লুট চক্রের সদস্যরা সক্রিয় হয়ে উঠছে। গত কয়েক মাসে একাধিক চুরি ও লুটের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ ৫ আগস্ট রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চেকপোস্ট বসিয়ে চুরি হওয়া ট্রাকসহ আন্তঃজেলা গাড়ি চোর চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করে মিরসরাই থানা পুলিশ।
জানা গেছে, গত কয়েক মাসে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পণ্য লুট চক্রের একাধিক সদস্যকে আটক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে মিরসরাইয় অংশে চক্রের মূলহোতা আনোয়ারুল আজিম বাবু ওরফে তেল বাবুকে এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি।
জোরারগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গেছে, ১১ জুন রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিনকির আস্তানা রেল স্টেশন এলাকা থেকে কাভার্ডভ্যান থেকে লুট করার সময় অর্ধকোটি টাকার গার্মেন্টস পণ্য উদ্ধার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। ৩৪৫টি কার্টুনে ১৫ হাজার ৬শ ৭৫পিস বেবি সুয়েটার উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৪৭ লাখ ২ হাজার ৫০০ টাকা। পরে আনোয়ারুল আজিম বাবুকে প্রধান আসামি ও অজ্ঞাত ৬-৭ জনের নামে জোরারগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
এর আগে ১৩ মে রাতে ৬০ বস্তা সরকারি চালসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোট কমলসহ এলাকার পণ্য লুটের অন্যতম হোতা নুরুজ্জামান নুরুকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-৭ এর একটি দল। তখন র‌্যাব ৭ এর (ফেনী) ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মো. নুরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে নুরু মহাসড়কে পণ্যবাহী পরিবহন থেকে বিভিন্ন পণ্য লুট করতো বলে র‌্যাবকে তথ্য দিয়েছে। ২ জুলাই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চোরাই তেল বিক্রির মূল হোতা ছালেহ আহম্মদ দুলালকে গ্রেফতার করে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। এ সময় বিপুল পরিমাণ চোরাই তেল বিক্রির সরঞ্জাম ও তেল উদ্ধার করা হয়। সর্বশেষ গত ৫ আগস্ট রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাইয়ে চেকপোস্ট বসিয়ে চুরি হওয়া ট্রাকসহ আন্তঃজেলা গাড়ি চোর চক্রের সদস্য মাহমুদুল হাসানকে আটক করে মিরসরাই থানা পুলিশ।
সূত্র জানায়, ২০০৫ সালে গঠন করা হয় হাইওয়ে পুলিশ। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রাম সিটি গেট থেকে ফেনীর মহিপাল পর্যন্ত ৯৫ কিলোমিটারে রয়েছে ৫টি হাইওয়ে পুলিশের ফাঁড়ি। এগুলো হল সীতাকু-ের বারআউলিয়া হাইওয়ে পুলিশ, কুমিরা পুলিশ ফাঁড়ি, মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ চৌধুরীহাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি, ফেনীর মুহুরীগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি ও ফেনীর মহিপাল পুলিশ ফাঁড়ি।
চট্টগ্রাম আন্তঃজেলা পণ্য পরিবহন কাভার্ড ভ্যান-ট্রাক মালিক সমিতি মহাসচিব নুরুল আবছার জানান, অসুস্থতার কারণে গত তিন মাস তিনি অফিসে যেতে পারেন নি। তাই পণ্যলুটের সঠিক তথ্য সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তবে জুন মাসে একটি কাভার্ডভ্যান লুটের ঘটনা ঘটেছে। যা জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
এদিকে থানা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে হাইওয়ে পুলিশ নিয়মিত টহল জোরদার করছে বলে দাবি করেন জোরারগঞ্জ চৌধুরীহাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফিরোজ হোসেন।
মিরসরাই থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) দীনেশ চন্দ্র দাশ গুপ্ত জানান, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে অথবা যখন মাদক কিংবা অবৈধ পণ্য পাচারে গোপন সংবাদ পাওয়া যায় তখন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে মহাসড়কের চেকপোস্ট বসানো হয়ে থাকে।