আখতারুজ্জামান বাবু নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার শিক্ষা দেন

স্মরণসভায় মাহবুবুল আলম হানিফ

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বস্ত থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি সকল পরিচিতি ছাপিয়ে রাজনীতিবিদ পরিচয়েই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। সামরিক স্বৈরশাসকের মন্ত্রী হবার প্রলোভন তাকে টলাতে পারেনি।
তিনি গতকাল বুধবার বিকেলে আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জননেতা আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর মৃত্যুবার্ষিকীর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব বঙ্গবন্ধু হলে এ স্মরণসভার আয়োজন করে।
মাহবুবুল আলম হানিফ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বাবু ভাইকে শ্রদ্ধা করতেন। জননেত্রীর নেতৃত্বে সোনার বাংলা গড়তে পারলেই বাবু ভাইয়ের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা জানানো হবে।
তিনি বলেন, খন্দকার মোস্তাকের বেঈমানির কারণে জাতীয় চার নেতা জীবন দিয়েছেন কিন্তু বঙ্গবন্ধুর রক্তের সাথে বেঈমানি করেননি। শত প্রলোভনকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে জাতীয় চার নেতা শহীদ হয়েছেন। তাঁদের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে যেতে হবে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন এমপি বলেন, নেতা আর জননেতা এক নয়, আখতারুজ্জামান বাবু ছিলেন জননেতা, গণমানুষের নেতা। বাবু ভাই ব্যবসায়ীদের সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং তাদেরও নেতা ছিলেন। তিনি কথা ও কাজে এক থাকতেন। রাজনীতিতে শ্রদ্ধা, সৌজন্যতা ও সম্মান প্রদর্শন দরকার। তিনি বলেন, নেতৃত্বের প্রতি অটুট আস্থা রেখে যাতে দলে ঐক্য রাখা যায় তা দেখতে হবে। বাবু ভাইয়ের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করলে আমাদের রাজনীতি সুন্দর হবে। মন্ত্রী না হয়েও তিনি দলের জন্য কাজ করেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ এমপি বলেন, বাবু ভাই একজন ধনাঢ্য ব্যক্তি হলেও তার বাড়িতে সর্বসাধারণের অবাধ যাতায়াত ছিল। নেতৃত্বের মধ্যে বিতর্ক থাকলেও ভিন্ন মতাবলম্বীদের সঙ্গে তিনি সৌজন্যতা দেখাতেন। দলের ঐক্যের প্রতীক আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু সর্বক্ষেত্রে সফল মানুষ ছিলেন।
ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি বলেন, আমার বাবা আজ দুনিয়াতে নেই, মাঝে মাঝে কষ্ট লাগে কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছেই বেঁচে আছেন তিনি। সকল প্রলোভন উপেক্ষা করে তিনি আওয়ামী লীগে বিশ্বস্ততার সাথে ছিলেন, আবার নির্যাতনের মুখেও অকুতোভয়ে আওয়ামী লীগ করেছেন। তিনি নেতা-কর্মীদের ত্যাগের শিক্ষা দিয়েছেন।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ওয়ান ইলেভেনের পর দুঃসময়ে যখন অনেক বড় বড় নেতা আস্থার সংকটে ভুগছিলেন তখন তিনি আস্থা হারাননি। পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে অনেকে ক্ষমতার উচ্ছিষ্টের লোভে পড়েছিলেন তখন আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু দল ছেড়ে যাননি বরং নিজের সর্বস্ব ঢেলে দিয়ে দলের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। তাদের সেই ত্যাগে আজ দল টানা তৃতীয় বারের মত ক্ষমতায়।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদর চেয়ারম্যান এম এ সালাম বলেন, বাবু ভাই বিত্তশালী ছিলেন কিন্তু সাধারণ মানুষকে আপন করে টেনে নিতেন। আজ বিত্তবানরা দলকে নিজের বাবার সম্পত্তিতে পরিণত করতে চান। উনার সান্নিধ্য পেয়েছি। তাঁর আদর্শ ধারণ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ। সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী, সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সহসভাপতি মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী, আবুল কালাম চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এ কে এম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক এমপি চেমন আরা তৈয়ব, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহাজাদা মহিউদ্দিন, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মির্জা কছির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহির উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ দাশ, খোরশেদ আলম, আবু জাফর, বোরহান উদ্দিন এমরান, ডা. তিমির বরণ চৌধুরী, গোলাম ফারুক ডলার, আবদুল হান্নান চৌধুরী মঞ্জু, আবদুল কাদের সুজন, নুরুল আবছার চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ, অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক, বিজয় কুমার বড়–য়া প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি