১৪ দলের শরিকের আসন এক ধাক্কায় ৭

সুপ্রভাত ডেস্ক »

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলের শরিকদের আসন কমিয়েছে আওয়ামী লীগ। একাদশ সংসদ নির্বাচনে শরিকদেরকে ১৬টি আসনে ছাড় দেওয়া হলেও এবার তা কমিয়ে ৭ করা হয়েছে। বর্তমান সংসদে প্রতিনিধিত্ব থাকা বিকল্প ধারা ও তরীকত ফেডারেশনকে ছাড় দেয়নি ক্ষমতাসীন দল। মাজারভিত্তিক দল তরীকত এখনও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে চেয়ে থাকার কথা জানিয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

গত ৩ ডিসেম্বর থেকে দেন দরবার শুরুর হওয়ার দ্বাদশ দিন বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত জানানো হয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। সাতটি আসনের মধ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদকে তিনটি করে এবং জাতীয় পার্টি-জেপিকে দেওয়া হয়েছে একটি আসন। বর্তমান সংসদে ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাসদের তিনটি করে এবং জেপির একটি আসন রয়েছে।

তবে গত নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে জয় পাওয়া মেনন এবার বরিশালে নির্বাচন করবেন। তিনি বরিশাল-২ ও ৩ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।

চৌদ্দ দলীয় জোটের সমন্বয়ক আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আজকে চৌদ্দ দলীয় জোট নেতাদের সঙ্গে আমরা বসেছিলাম। সেখানে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।”

তবে কোন কোন আসন শরিকদের দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাননি তিনি।

২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ১৬টি আসন থেকে কমিয়ে এবার সাতটিতে নামানোর বিষয়ে শরিক দলগুলোর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে ফোন করা হলে দুই জনই বৈঠকে থাকার কথা জানিয়ে কথা বলতে চাননি।

জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, ‘আপাতত সাতটি দেওয়া হয়েছে। কে কোন আসন পাবে, সেটাও এখনও চূড়ান্ত হয়নি।

তাহলে আসন আরও বাড়তে পারে কি না, এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আরও বাড়ুক। আমরা সবাই তা বলেছি। আশা করছি তা বাড়বে।’

চট্টগ্রাম-২ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভা-ারী বলেন, ‘আজকে আমু ভাই যে ঘোষণাটি দিয়েছেন, সেটি আনুষ্ঠানিক না। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ওনার প্রতি আমার আস্থা অতীতেও ছিল, এখনও আছে। আমি আশা করছি গতবারের মতো এবারও আসন পাব।’

এই আসনটিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে সাবেক সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের মেয়ে খাদিজাতুল আনোয়ারকে।

সেখানে প্রার্থী হয়েছেন নতুন নিবন্ধিত দল বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান শাহজাদা সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ আলহাসানী আল মাইজভা-ারীও।

নজিবুল বশর ও সাইফুদ্দীন সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। সেখানে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের চেয়ারম্যান মাওলানা এম এ মতিনও প্রার্থী হয়েছেন। এই তিন জনই সুন্নি সুন্নী মতাদর্শী।

বিকল্প ধারা গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমর্থনে দুটি আসনে জয় পেয়েছিল। এবার তাদেরকে কোনে আসন দেওয়া হয়নি।

দলের দুই সংসদ সদস্যের মধ্যে লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের আবদুল মান্নানের মনোনয়নপত্র রিটার্নিং কর্মকর্তা অবৈধ ঘোষণা করেছেন। নির্বাচন কমিশনে আপিলেও তিনি প্রার্থিতা ফিরে পাননি।

মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর ছেলে মাহী বি চৌধুরী গত নির্বাচনে নৌকা নিয়ে লড়াই করেছিলেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা এবার তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছিলেন। পরে নির্বাচন কমিশনে আপিলে তিনি প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী শরিক দলগুলোর মধ্যে এবার সাম্যবাদী দলের দীলিপ বড়ুয়া চট্টগ্রাম-১ এবং জেপির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম ঢাকা-১৪ আসনে ছাড় দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। দৃশ্যত তাদের হতাশ হতে হয়েছে।