হোমগ্রাউন্ডে প্রথম খেলায় বিধ্বস্ত চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স

এ জেড এম হায়দার »
ঢাকার মিরপুরে এবারের আসরে প্রথম দেখায় কুমিল্লার কাছে পরাস্ত হয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। আর ঘরের মাঠে সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে পারবে-এমনটা প্রত্যাশা ছিল স্বাগতিক দর্শকদের। কিন্তু একেবারে বিধ্বস্ত করেই রেকর্ডের পসরা সাজিয়ে চট্টগ্রামকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে লিটনের দল। সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর, দুই ইংরেজ তারকা জ্যাকসের সেঞ্চুরি ও স্পিনার মঈন আলীর হ্যাটট্রিকে ৭৩ রানের বিশাল পরাজয় দিয়ে সূচনা হয়েছে চট্টগ্রামের। বর্তমানে কুমিল্লা ৮ ম্যাচে ৬ জয়ে ১২ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে।
টস জিতে চট্টগ্রামের দলপতি শোভাগত হোম ফিল্ডিং করতে নামেন। তার এ সিদ্ধান্তকে উড়িয়ে দিয়ে জ্যাকসের ঝড়ো সেঞ্চুরি, লিটন ও মঈন আলীর অর্ধ সেঞ্চুরিতে ভর করে ৩ উইকেটে পাহাড়সম ২৩৯ রান করে কুমিল্লা। বিপিএলে এর আগে এই কীর্তি রয়েছে রংপুর রাইডার্সের। বিশাল রানের বিরুদ্ধে খেলতে গিয়ে ১৬.৩ ওভারে ১৬৬ রানে থামতে হয় চট্টগ্রামের। এ রানেই পুরো ইনিংস গুটিয়ে যায়। তবে তানজীদ তামিম-জস ব্রাউনের জুটি ৭.৩ ওভারে তুলে দেন ৮০ রান। ২৩ বলে ৩৬ রান করা তানজীদ ফিরে গেলেই চট্টগ্রামের ব্যাটারদের আসা-যাওয়া শুরু হয়। টর্ণেডোর মত বধ্বিস্ত হতে থাকে তাদের ইনিংস। ১০ রানের ব্যবধানে ২৪ বলে ৪১ রান করে ব্রাউনও ফিরে যান সাজঘরে। একাদশে প্রথম সুযোগ পেয়ে রিশাদ তার ঘূর্ণিতে মঈন আলীকে নিয়ে চট্টগ্রামের ইনিংসে ধ্বস নামিয়ে দেন। সৈকত আলী ১১ বলে ৩৬ রান করে প্রতিরোধের আভাস দিয়েও তাদের ঘূর্ণিতে বেশি দূর যেতে পারেন নি। রিশাদ ২২ ও মঈন আলী ২৩ রানে ৪টি করে এবং মোস্তাফিজুর ৪৬ রানে ২ উইকেট শিকার করেন। এবারের বিপিএলে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক করেন মঈন। এর আগে প্রথম হ্যাটট্রিক করেন শরিফুলের।
এর আগে ক্যাচ মিসের সুযোগ কাজে লাগিয়ে উইল জ্যাকসের সেঞ্চুরি আর লিটন-মঈনের ঝড়ো সেঞ্চুরিতে কুমিল্লার স্কোর বেশ সমৃদ্ধ হয়। মাত্র ৫০ বলে সেঞ্চুরি (১০৮ রান করে অপরাজিত) করে জ্যাকস। এ আসরে যা তৃতীয় সেঞ্চুরি। অথচ শূন্যরানে ফিরে যেতে পারতেন তিনি। জীবন পেয়ে জ্যাকস চার-ছক্কায় দলীয় রানকে পাহাড়ের চ’ড়ায় পৌছে দিতে অগ্রণী ভ’মিকা রাখেন। ২ চার ও ৫ ছক্কায় সাজিয়ে তিনিও অপরাজিত ছিলেন। আগের রাতেই চট্টগ্রাম এসে বিশে^র অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার মঈন আলী হ্যাটট্রিক করার আগে উপহার দেন এ অনবদ্য ইনিংস। অধিনায়ক লিটন ৩১ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৬০ রান। আগের খেলায় সেঞ্চুরি করা তাওহীদ হৃদয় কোন রান না করেই ফিরে গেছেন। ১০ রার করে আউট হন ব্রুক গেস্ট। শুরুতে লিটন ও জ্যাকসের ৪৭ বলে ৮৬ রানের জুটি কুমিল্লার ইনিংসে ভীত এনে দেয়। শেষ দিকে জ্যাকস ও মঈন আলী ৫৩ বলে ১২৮ রানের মূল্যবান ইনিংস গড়েন। চট্টগ্রামের আল-আমিন ৪ ওভারে ৬৯ রান দিয়ে বিপিএলে বেশি রান খরচ করা বোলার হিসেবে নাম অর্ন্তভ’ক্ত করেন। ২ উইকেট নেন শহিদুল। ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে জ্যাকসের হাতে। পুরস্কার তুলে দেন প্রতিযোগিতার টাইটেল স্পন্সর ইস্পাহানি টি লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার শাহ মঈনুদ্দিন হাসান। চট্টগ্রাম ভেন্যুতে আজ দ্বিতীয় দিনের প্রথম খেলায় বরিশাল-ঢাকা (দুপুর দেড়টায়) এবং কুমিল্লা ও খুলনা (সাড়ে ছয়টায়) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। এ ভেন্যুতে খেলা চলবে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরমধ্যে আগামীকাল ১৫ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি আছে বিরতি।