হুমকির মুখে নির্মাণাধীন ছয়লেনের সেতু

মাতামুহুরী সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন

এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপকণ্ঠে চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা পয়েন্টে নতুন ছয়লেনের মাতামুহুরী সেতুর নির্মাণকাজ। ইতোমধ্যে নদীর বুকে পাইলিংয়ের কাজেরও যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। পাশাপাশি নদীতে পিলার স্থাপনের জন্য চলমান পাইলিংয়ের কাজের প্রায় ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। সর্বোপরি এই সেতুর নির্মাণকাজে বেশ অগ্রগতি হয়েছে।প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ছয় লেনের মাতামুহুরী সেতু হবে খুবই দৃষ্টিনন্দন। ডিজাইন অনুযায়ী ছয় লেনের সেতুর মধ্যে বিদ্যমান দুই লেনের সেতুর দক্ষিণাংশে প্রথমে তিন লেনের নির্মাণকাজ চলছে। এই তিন লেনের কাজ শতভাগ শেষ হওয়ার পর বিদ্যমান পুরাতন সেতু ভেঙে ওই স্থানে নির্মাণকাজ শুরু হবে বাকি তিন লেনের সেতুর নির্মাণকাজ।অভিযোগ উঠেছে, উন্নয়নকাজের অজুহাতে প্রশাসনের নজরদারি না থাকার সুযোগে বেশ কিছুদিন ধরে নিমাণাধীন সেতুর একেবারে সন্নিকট (তলদেশ) এলাকা থেকে স্থানীয় কতিপয় মহল অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চলছেন। বর্তমানে প্রতিদিন স্কেভেটর গাড়ি দিয়ে তলদেশ কেটে অভিযুক্তরা বালু উত্তোলন পুর্বক ব্যাপকহারে বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। এ অবস্থায় সেতুর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলনের কারণে বর্তমানে হুমকির মুখে পড়েছে সরকারের শতকোটি টাকা বরাদ্দে নির্মিতব্য নতুন মাতামুহুরী সেতু। সম্প্রতি কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্দেশে চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে চকরিয়া উপজেলা প্রশাসন সাড়াশি অভিযান অব্যাহত রাখলেও বর্তমানে নির্বিঘেœ চিরিঙ্গা সেতুর নিচ থেকে উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি। পাশাপাশি উত্তোলনকৃত বালু নিদিষ্ট পয়েন্টে মজুদ না রেখে বাহিরে অবৈধভাবে বিক্রি করে আসছে। ফলে বর্তমানে চকরিয়া উপজেলার প্রতিটি জনপদে নির্বিঘেœ বেচাবিক্রি চলছে। জানা গেছে, চকরিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অধীন অন্তত ১৫টি সরকারি বালু মহাল রয়েছে। মুলত সরকারি মহালের রাজস্ব নিশ্চিতে উপজেলা প্রশাসন অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান চালাচ্ছে। তারপরও কীভাবে মাতামুহুরী সেতুর নীচ থেকে প্রশাসনের বিনা অনুমতিতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সরকারি বালু মহালের ইজারাদাররা। এতে বালুমহাল ইজারা খাতে জেলা প্রশাসন বিপুল টাকার রাজস্ব ক্ষতির আশঙ্কায় পড়েছেন বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এব্যাপারে জেলা প্রশাসকের হস্ত ক্ষেপ কামনা করেছেন সরকারি বালু মহালের ইজারাদাররা। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, মাতামুহুরীর নদীর দিগরপানখালী পয়েন্ট থেকে দীর্ঘদিন থেকে বালি উত্তোলন করে আসছে এক শ্রেণির অবৈধ বালি ব্যবসায়ীর দল। ফলে তীরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে করে নদী তীরবর্তী বসতবাড়ি থেকে শুরু করে নানা স্থাপনা বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যায়। তাই যেকোন উপায়ে এসব অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধ করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।