হালদার তীর রক্ষা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

ধসে পড়ছে সিসি ব্লক

মো. আবু মনসুর, ফটিকছড়ি :

একের পর এক ধ্বসে পড়ছে বিশ্বের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর তীর রক্ষা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে সিসি ব্লক। প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তিন বছর মেয়াদি  ১ শ ৫৭ কোটি টাকার এই প্রকল্পে। সরেজমিনে পরিদর্শনে ভূক্তভোগীরা জানান, কয়েকদিন আগে সমিতিরহাট-রোসাংগিরি হাজি পাড়া এলাকায় প্রকল্পের সিসি ব্লক গুলো ধসে পড়েছে, তার আগে গত আগস্ট মাসে নাজিরহাট নতুন ব্রিজের পশ্চিম পাশে এবং সুয়াবিল মন্দাকিনি খালের সংযোগ এলাকায় ব্লক ধ্বসে পড়েছে। দেখা গেছে সিসি ব্লকগুলো ধসে পড়েছে হালদা নদীর বুকে, ছিড়ে গেছে ব্লকের নিচে বসানো জিও টেক্সটাইল। ব্লক স্থাপনের স্থানে ইটের কণা আর বালির পরিমাণ খুবই কম। এবিষয়ে স্থানীয় জনসাধারণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রহমান ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীল প্রকৌশলীদের অবহেলার অভিযোগ তুলেন। ভুক্তভোগী হালদা পাড়ের মানুষেরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। হালদা পাড়ের বাসিন্দা নাজমা খাতুন (৬৫) বলেন হালদা নদী থেকে স্কেভেটর দিয়ে মাটি নিয়ে আইল বেঁধে তার উপর দিয়ে কোন মতে ব্লক বসাচ্ছে। সমিতিরহাট ইউপি সদস্য মো. আইয়ুব জানান, সিসি ব্লকগুলো স্থাপনের সময় পানি উন্নয়নবোর্ডের প্রকৌশলী ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে আমরা অভিযোগ করেছিলাম। বলেছিলাম, নদী থেকে তোলা মাটি লো শক্ত হবার আগে যাতে ব্লক না বসায়। কিন্তু তারা ব্লক স্থাপন করে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) সভায় চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি ও হাটহাজারি উপজেলায় হালদা নদী ও ধুরং খালের তীর রক্ষা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে ১শ৫৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা অনুমোদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে পানি উন্নয়ন বোর্ড তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ শুরু করলেও প্রকল্প এলাকায় বেশ কিছু কাজ দৃশ্যমান হবার ২-৩ মাসের মাথায় সিসি ব্লকগুলো ধসে পড়তে দেখা গেছে।এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকোশলী, চয়ন কুমার ত্রিপুরা জানান,হালদা নদী ও ধুরংখালের তীর রক্ষা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের কাজ এখনো চলমান। ধ্বসে পড়া সিসি ব্লকগুলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পুনরায় ঠিক করে দিতে বলেছি।

বর্তমানে কাজ ছলছে। সংসদ সদস্য নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী  হালদা নদী ও ধুরংখালের তীর রক্ষা ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের বিষয়ে বলেন কাজের মান শতভাগ ঠিক রাখতে আমি ফটিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে জন প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি টিম গঠন করে দিয়েছি প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট কাঊকে ছাড় দেয়া হবেনা।