স্ল্যাবের নিচে নালাগুলো কী অবস্থায় আছে

১৬ সেপ্টেম্বর সকালে বৃষ্টি ছাড়াই জিইসি মোড় এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। গাড়ি চলাচল ব্যহত হয়। প্রায় ১২ ঘণ্টা পর চসিকের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মীরা কারণ উদঘাটন করে জানান, নালার ভেতরে অন্য সেবা সংস্থার পাইপ লাইনে আবর্জনা আটকে গিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় রাস্তায় পানি ওঠছে। একইরকম ঘটনা আলমাস সিনেমা হলের সামনে রেবতি মোহন লেইনে ঘটে ৯ অক্টোবর রাতে। একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বেজ ক্যাম্প থেকে বের হওয়া পলি বর্জ্য ড্রেনে জমলে নালার পানি ওঠে যায় রাস্তায়। ১২ অক্টোবর রাতে রাস্তায় নালার পানি জমে থাকতে দেখা যায় ইউনেস্কো সিটি সেন্টারের দক্ষিণে।
নবাব সিরাজউদ্দৌলা সড়কের জয়নাব কলোনি এলাকার বাসিন্দা রুমন সুপ্রভাতের প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি তিন বছর ধরে এখানে থাকছি। এ তিন বছরে স্ল্যাব তুলে ময়লা পরিষ্কার করতে কখনো দেখিনি। তাই জোয়ারের সময় আমাদের খুব কষ্টে পড়তে হয়। বিশেষ করে বৃষ্টি হলে এখানে এক বুক পানি জমে যায়। পানি তো পরে সরে যায়। কিন্তু যতক্ষণ না সরে ততক্ষণ তো এখানে নিচতলার লোকজন ঘরে থাকতে পারে না।’
নালার এই অবস্থা কেন, সে প্রশ্নের উত্তরে চসিক সূত্রে জানা যায়, নগরীতে প্রতিদিন তিন হাজার টন কঠিন বর্জ্য তৈরি হয়। এরমধ্যে মাত্র দুই হাজার টন বর্জ্য অপসারণ করতে পারে সংস্থাটি। বাকি এক হাজার টন বর্জ্য ড্রেন ও খালে ফেলা হয়।
এ বড় ভয়ংকর কথা। মানুষ নালায় ময়লা ফেলবে কেন? কারণ নগরের অধিকাংশ মানুষ মনে করে ময়লা ফেলার জায়গা হলো নালা। তাই যেকোনো আবর্জনা ফেলে নালাতে। খোলা নালা মাঝেমধ্যে পরিষ্কার করা হলেও স্লাবের নিচেরগুলোর অবস্থা কী? তার উত্তরে জিইসি কনভেনশন এলাকার সাইফুল নামের এক দোকানি বলেন, ‘এখানে যে স্ল্যাবগুলো ড্রেনের ওপর বসিয়েছে, ওগুলো কবে তুলে পরিষ্কার করা হয়েছে সেটা কেউ জানে না। এক জায়গায় বছরের পর বছর ধরে ময়লা জমতে থাকলে এ অবস্থাতো হবেই। গত মাসে এতো পানি উঠলো। মানুষ রাস্তায় নেমে বিপদে পড়ে গেলো। এরপরও একবারের জন্য সবগুলো স্ল্যাবগুলো তুলে পুরো ড্রেনটা পরিষ্কার করা হয়নি।’
জানা যায়, নালা-খালের মাটি ও আবর্জনা তুলতে চলতি বছরের এপ্রিলে একটি প্রকল্প হাতে নেয় সিটি করপোরেশন। এ প্রকল্পে ৫টি স্কেভেটর দিয়ে কাজ কাজ করার কথা। আর যেসব জায়গায় স্কেভেটর দিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়, সেখানে মানুষের সাহায্যে কাজ করার কথা। পরবর্তীতে এ কাজটি দ্রুত বাস্তবায়ন করতে প্রকল্পটিকে ওয়ার্ডভিত্তিক করে ভাগ করে দেওয়া হয়। এরপরও পরিস্থিতি সামান্য বদলায়নি।
এটা খুব সাধারণ বোধগম্য যে খোলা নালাই যেখানে নিয়মিত পরিস্কার হওয়ার নজির কম সেখানে ঢাকনার নিচেরগুলোর কী অবস্থা! শুধু প্রকল্পের পর প্রকল্প করে কী লাভ হবে যদি নগরবাসী সিটি করপোরেশনের ময়লা অপসারণের মতো নৈমিত্তিক সেবাটাই না পায়।