সুন্দরবন সম্প্রসারণ এবং নতুন বাঘ এখন দাতা ও সহযোগী

এস এম মারুফ »

বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। গত বুধবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে এ তথ্য উপস্থাপন করেছেন। ২০১৫ সালে বাঘের সংখ্যা ছিল ১০৬, ২০১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪ তে। এ সংখ্যা আরও বাড়বে। সরকার সুন্দরবন সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নিয়েছে। বিশাল এলাকাজুড়ে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট হবে। ২০২১ সালের হালনাগাদ তথ্য হলো বাংলাদেশ নিজেই আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে নতুন বাঘ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। করোনার ছোবলে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে জিডিপি’র উল্টো প্রবৃদ্ধি ৭.৫%। সেখানে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি শত প্রতিকুলতার মাঝেও ৫.৫%। গত বছর যখন বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ভারতের সঙ্গে এট্ পার হয়ে গিয়েছিল তখন সে দেশে কত জল্পনা-কল্পনা, ২০২১এ এসে বাংলাদেশ পাত্তা পাবেনা। হয়েছে ঠিক উল্টোটা। এখন বাংলাদেশ জিডিপিতে ভারতের চেয়ে এগিয়ে ২৮০ ডলার।

ভালো খবর আরো আছে। মুখ লাগবে না এমন নিশ্চয়তা পেলে সে খবরও দিতে পারি। নতুন খবর হলো পাকিস্তান রাষ্ট্রও বাংলাদেশের কাছে ঋণ সাহায্য চাইছে। বাংলাদেশের কাছ থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেলে অফিশিয়ালি প্রস্তাব রাখবে। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় রিজার্ভ এখন প্রায় ৪৫ বিলিয়ান ডলার।  ইতিমধ্যে বাংলাদেশ শ্রীলংকাকে ২০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। ৬০ কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ সাহায্য করেছে সুদানে। সবাইকে টাসকি লাগিয়ে দেয়ার জন্য শ্রীলঙ্কাকে ঋণ দেয়া হয়নি। সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য ঋণ দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সকল প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়। বিশ্ব অর্থনীতিতে উদীয়মান ব্যাঘ্র বাংলাদেশ ৫.৩২ মিলিয়ন ডলার, ৬৮ কোটি টাকার সমপরিমাণ অর্থ দিয়ে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে এসেছে সুদানে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসৃত হলে নিশ্চয়ই বাংলাদেশ পাকিস্তানকেও একদিন ঋণ সহায়তা করবে।

এবার অন্য এক প্রতিবেশীর কথা বলি। এই প্রতিবেশীর নাম ভুটান। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বকে প্রথম স্বীকৃতি দিয়েছিল ভুটান। এবার ভুটানের জন্যও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম, মোংলা এবং পায়রা এই তিনটি সমুদ্রবন্দরসহ বাংলাদেশের মোট ছয়টি বন্দর ভুটানকে ব্যবহার করতে দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। এ সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বন্দরসমূহে ভুটানের মাল ওঠানামার ব্যবস্থা থাকবে। একই সঙ্গে দেশের বন্দরসমূহে ভুটানের ব্যবহারের সুবিধা দিতে প্রবেশ ও বাহিরের পয়েন্টের সংখ্যাও বাড়বে। সুবিধাসমূহ নিশ্চিত হবে পোর্ট অফ কল ঘোষণার মাধ্যমে। এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ এবং ভুটানের মধ্যে ইতিমধ্যে সম্পাদিত ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট এর পালে নতুন করে হাওয়া যোগাবে, এটা নিশ্চয়ই কাউকে বলে দিতে হবে না। ভূটানের সঙ্গে বন্দর সহযোগিতা চুক্তি হবে বিশাল পরিসরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্ম পরিকল্পনার অংশবিশেষ মাত্র।

লেখক : প্রকৌশলী।