সরকারি হাসপাতালের ওষুধ রোগীরা পায় কি

সরকারি হাসপাতালে অনেক ওষুধ রোগীদের বিনাপয়সায় দেয় সরকার। কিন্তু দুঃখজনক হলো, সে ওষুধ রোগীদের কাছে পৌঁছায় না। তা বিক্রি করে দেওয়া হয় বাইরে। এমন ওষুধ বিক্রির চক্র সক্রিয় আছে প্রতিটি হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে। একথা ‘ওপেন সিক্রেট’ হলেও তাদের বিরুদ্ধে করার যেন কিছু নেই।
গত বৃহস্পতিবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছদ্মবেশে অভিযান চালিয়ে তেমন ওষুধ বিক্রির প্রমাণ পেয়েছে দুদক। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ীদের বিরুদ্ধে পরে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ায় এ অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার বা আটক করেননি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তারা।
হাসপাতালের জরুরি ও মেডিসিন বিভাগের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে পরিচালিত এ অভিযান শেষে দুদকের একজন সহকারী পরিচালক সাংবাদিকদের জানান, রোগীদের নামে বরাদ্দ দেখালেও তাদের ওষুধ সরবরাহ করা হয় না। তিনি স্বীকার করেন, বেডে রোগী না থাকার পরও ভুয়া ওষুধ সরবরাহের মত বিভিন্ন অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, রোগীদের ওষুধ সরবরাহ না করে আত্মসাৎ এবং বাইরে থেকে কেনানো হয় এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযান চালানো হয়।
এদিকে মেডিসিন ওয়ার্ডের রোগীদেরও ওষুধ বিতরণের তথ্য রেজিস্ট্রারে উল্লেখ করলেও দেওয়া হয়নি। আবার কিছু ওষুধ রোগীদেরও দেওয়া হয়নি এবং ডাক্তারও ব্যবস্থাপত্রে লিখেননি স্টোর রুমে সে ধরনের ওষুধেরও গড়মিল পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি। এসব ওষুধ কোথায় গেল দায়িত্বপ্রাপ্তরা সেগুলোর সদুত্তর দিতে পারেনি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা আমাদের কমিশনকে জানাব। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান হাসপাতালের পরিচালক।
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন নিম্নমধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে বিত্তহীন মানুষেরা, যাদের বেশিরভাগেরই টাকা দিয়ে ওষুধ কেনার সামর্থ্য থাকে না। এদের কথা ভেবেই সরকার অনেক ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে সরবরাহ করে। কিন্তু কিছু দুর্নীতিবাজ লোকের কারণে বছরের পর বছর বঞ্চিত হচ্ছে অসহায় মানুষেরা। গরিবের হক মারা এইসব অসৎ ব্যক্তিদের সাজা হওয়া উচিত। এবং এই চক্র ভেঙে দেওয়া উচিত। আমরা আশা করব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যে আশ্বাস দিয়েছে দুদক কর্মকর্তাদের সে আশ্বাস তারা বাস্তবায়ন করবেন। শুধু চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নয়, দেশের সব সরকারি হাসপাতাল থেকেই এই অসৎ চক্রকে সমূলে উৎখাত করা হবে।