সমীক্ষা ও মাস্টারপ্ল্যান প্রকল্প একনেকে অনুমোদন

চট্টগ্রামে মেট্রোরেল প্রকল্প

সুপ্রভাত ডেস্ক »

রাজধানী ঢাকার পর চট্টগ্রামেও মেট্রোরেলের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। বাণিজ্যিক এ নগরীতে মেট্রোরেলের মাস্টারপ্ল্যান ও সমীক্ষা প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে অনুমোদিত প্রকল্পের বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

এম এ মান্নান বলেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এরিয়ার জন্য মাস্টারপ্ল্যানের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর জন্য ‘ট্রান্সপোর্ট মাস্টারপ্ল্যান অ্যান্ড প্রিলিমিনারি ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর আরবান মেট্রোরেল ট্রানজিট কনস্ট্রাকশন অব চিটাগাং মেট্রোপলিটন এরিয়া’ শীর্ষক প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যানজট কমাতে এবং চট্টগ্রাম মহানগরীর মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য পরিবেশবান্ধব মেট্রোরেলের সুযোগ তৈরি হবে।

এর আগে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এরিয়ার জন্য ট্রান্সপোর্ট মাস্টার প্ল্যানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য ‘ট্রান্সপোর্ট মাস্টারপ্ল্যান অ্যান্ড প্রিলিমিনারি ফিজিবিলিটি স্টাডি ফর আরবান মেট্রোরেল ট্রানজিট কন্সট্রাকশন অব চিটাগাং মেট্রোপলিটন’ এরিয়া শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা থেকে ৫৭ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। যেটি গতকাল একনেকে অনুমোদন পেয়েছে।

প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে যানজট হ্রাস ও মহানগরীর জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য পরিবেশবান্ধব মেট্রোসিস্টেম চালু করা হবে। ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় ডিটিসিএ, সিডিএ, সিসিসি ও সিএএ’র প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। খবর সারাবাংলা।

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চট্টগ্রাম মহানগরীতে ৪০ লাখ মানুষ বসবাস করে। শিল্প কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্রমবর্ধমান প্রসারের মাধ্যমে দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও দ্রুত নগরায়ন ঘটেছে। ফলে চট্টগ্রামে মহানগরীর পরিবহন ব্যবস্থার উপরে চাপ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ট্রাফিক জ্যাম, দুর্ঘটনা, বায়ুদূষণ ইত্যাদি সমস্যা বেড়ে চলছে।

চট্টগ্রাম শহর ও আশপাশের পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম বন্দর বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রামের ট্রাফিক ও পরিবহনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন কৌশল একটি সমীক্ষা পরিচালনা করে। পরবর্তীতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এমআরটি লাইন স্থাপনের জন্য একটি প্রাক-সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন করে। চট্টগ্রাম মহানগরীর যানজট পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন সংস্থা নানা পদক্ষেপ নিলেও সমন্বিত পরিকল্পনা না থাকায় বিচ্ছিন্নভাবে নেওয়া প্রকল্প জনদুর্ভোগে লাঘবে ফলপ্রসূ হয়নি।
এজন্য চট্টগ্রাম মহানগরী ও পাশ্ববর্তী এলাকার যানজট নিরসন ও পরিবেশ উন্নয়নে একটি পরিবহন মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। মেট্রোরেলের জন্য প্রাক-সম্ভব্যতা সমীক্ষা পরিচালনায় এই কারিগরি সহায়তা (টিএপিপি) প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর চলতি বছরের ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা।

ওই সভায় দেওয়া সুপারিশগুলো প্রতিপালন করায় প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) গতকালের বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়। সেটির অনুমোদন মেলে। ২০২৫ সালের মার্চের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)।’

প্রকল্পের মূল কার্যক্রমে ৫৭ কোটি টাকার পরামর্শক সেবা (মাস্টারপ্ল্যান এবং প্রাক সম্ভব্যতা সমীক্ষা), ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকার পরামর্শক সেবা (প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন), ২ কোটি ২৯ লাখ টাকার আউটসোর্সিং, ১ কোটি টাকার কারিগরি পরামর্শক, এক কোটি টাকার পরিবহন পরামর্শক এবং ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার গাড়ি ভাড়া বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে।