‘শুরু থেকে দাবি ছিল ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ককে আট লেন করার’

মাহবুবুল আলম
সভাপতি, এফবিসিসিআই

সুপ্রভাত : ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রীর কাছে আপনি একটি চিঠি দিয়েছিলেন, চট্টগ্রাম বিমানবন্দরকে আর গতিশীল করতে। বিমান চলাচল বৃদ্ধি করার বিষয়ে কী বলবেন।

মাহবুবুল আলম : হ্যাঁ আমি বলেছি শুধু পূর্বমুখী নয় আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গেও বিমান চলাচল বৃদ্ধি করা উচিত। আমাদের চট্টগ্রামের মানুষের সিঙ্গাপুর হয়ে ব্যাংকক হয়ে দেশের বাইরে যান। এটা হলে নিজেরাতো বটেই যারা ফরেন ইনভেস্টর তাদের জন্যও বড় সুযোগ হবে। কানেকটিভিটি ছাড়া সহজে কোনো ব্যবসায়ী আসতে চাইবে না। যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন যে ফ্লাইওভার বা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে উদ্বোধন করতে যাচ্ছেন, এর সুফল পেতে হলে কানেকটিভিটি বেশি ইমপরটেন্ট। কানেকটিভির জন্য পূর্বদিকে এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে, অথবা এটা এভাবে করতে পারে। ঢাকা-চিটাগাং-কলকাতা, ঢাকাÑ চিটাগাং-ব্যাংকক এমন রুট করতে পারবে।

সুপ্রভাত : মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্পাঞ্চল পুরোপুরি চালু হলে বিমানবন্দরে চাপ বাড়বে। বর্তমান বিমানবন্দরে রানওয়ে বৃদ্ধি করার সুযোগ খুবই সীমিত। এ প্রেক্ষিতে ফটিকছড়িÑমিরসরাইয়ের মাঝামাঝি কোনো স্থানে নতুন আরেকটি বিমানবন্দরের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন কি?
মাহবুব : এই মুহূর্তে বিমানবন্দরের দরকার হবে না। যেহেতু ফ্লাইওভার হয়ে গেছে ১৫/২০ মিনিটে বিমানবন্দর থেকে শহরে ঢুকতে পারবে। আমার মনে হয় যে সুযোগ আছে তাকে কাজে লাগানো। তবে রানওয়ে আরেকটি বাড়ানো দরকার। তবে নতুন বিমানবন্দর অবশ্যই লাগবে, যেমন বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর পুরোপুরি চালু হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে মনে হয় রানওয়ে বাড়ানো। অ্যামিরাতের ফ্লাইট যেন আসে। তাদের রিকোয়ারমেন্ট কী সেভাবে কাজ করলে আমার মনে হয় ভালো হবে।

সুপ্রভাত : ঢাকাÑচট্টগ্রাম মহাসড়ক যখন আট লেন করা দরকার তখন সেটা করা হলো চার লেনের। প্রধান বন্দরনগরীর সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সড়ক যোগাযোগ প্রাধিকার পাওয়া উচিত ছিল না?

মাহবুব : হ্যাঁ, এটাতো আমাদের শুরু থেকে দাবি ছিল ঢাকাÑচট্টগ্রাম সড়ককে আট লেন করার। কিছুদিন আগে আমাদের সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাহেব আট লেন করার কথা বলেছেন। আমি মনে করি কাজটা দ্রুত শুরু করে দেওয়া দরকার। এক্সপ্রেস ওয়ে করলে এয়ারের ওপর যে প্রেসার সেটা কমবে। এক্সপ্রেস রোড হলে তিনঘণ্টার মধ্যে ঢাকা পৌঁছানো যাবে। ঢাকাÑচট্টগ্রামের একমাত্র সড়ক এটা। এটা লাইফ লাইন। অর্থনীতিÑবাণিজ্য সবকিছু নির্ভর করে এই সড়কের ওপর।

সুপ্রভাত : রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে কী বলবেন?

ডুয়েল গেজ এখনও চালু হয়নি। এখনো ঢাকাÑচট্টগ্রামে চলছে মিটারগেজ। এটা ডাবলগেজ করার দাবি ছিল।

মাহবুব : আমরা এটার জন্যও বলছি। আমার মনে হয় এটাও করা দরকার। কারণ সাধারণ মানুষের একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম হলো ট্রেন কাজেই এটার ওপরও কাজ করা দরকার।

সুপ্রভাত : আমাদের একমাত্র পর্যটন শহর কক্সবাজারের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ এখনো সেকেলে। আপনি কি মনে করেন এর উন্নয়ন করা উচিত?
মাহবুব : অবশ্যই, আমি মনে করি এখন দুই লেনকে চার লেনে উন্নীত করা উচিত। কক্সবাজারে বিশাল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট হচ্ছে এবং সমুদ্রের মধ্যে রানওয়ে হচ্ছে, সবগুলো মিলে এখানে অনেকে আসবে এবং সেখান থেকে চট্টগ্রাম যাবে। সবমিলে আমি মনে করি এটাকে চার লেন করা উচিত।

সুপ্রভাত : কালুরঘাট রেল সেতু নিয়ে কিছু বলবেন। মানুষ মনে করে এই সেতুর কারণে রেল যোগাযোগের পূর্ণ সুবিধা মানুষ পাবে না।
মাহবুব : এই সেতু মেরামতের কাজ চলছে। এটা এখন দ্রুত শেষ করা দরকার।

সুপ্রভাত : চট্টগ্রাম বাণিজ্য নগরী হিসেবে অনেক প্রতিষ্ঠানের হেড অফিস ছিল। এখন বলতে গেলে কিছুই নেই।
মাহবুব : আমি মনে করি বিকেন্দ্রীকরণ করা উচিত সরকারি রেগুলেটরি বডি যা আছে এগুলোকে যদি এমপাওয়ারমেন্ট করে তাহলে সমস্যা অনেক কমবে। অন্য বিভাগীয় শহরগুলোও তেমন সুযোগ পাবে। কিছু কিছু ব্যাংকের হেড কোয়ার্টার না দিলেও অন্তত পক্ষে ডিএমডি, অ্যাডিশনাল ডিএমডিকে এম্পাওয়ার করা যায় তাহলে ডিসিশন মেকিং এখান থেকে হবে।

সুপ্রভাত : ধন্যবাদ আপনাকে।
মাহবুব : আপনাকে এবং সে সঙ্গে সুপ্রভাতকে ধন্যবাদ। সুপ্রভাতের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে শুভ কামনা রইল।