শিশুশ্রম জিইয়ে রেখে কল্যাণকামী রাষ্ট্র সম্ভব নয়

ওয়েবিনারে শিক্ষা উপমন্ত্রী

‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রোপিত কল্যাণকামী রাষ্ট্রে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা কাজ করছি, যেখানে কোন পিছিয়ে পড়া গোষ্ঠী থাকবে না। শিশুশ্রমকে জিইয়ে রেখে কোনভাবে কল্যাণকামী রাষ্ট্র হতে পারে না। গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুশ্রম বাড়ছে, এটি অনেকটা ক্রীতদাস প্রথার মতো, এ অবস্থা দূর করতে হবে। দারিদ্রতার সুযোগে শ্রম ও শিক্ষার বিনিময়ে শিশুদের অপব্যবহার বন্ধ করতে হবে।’
বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম আয়োজিত ঘাসফুল চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনলাইন ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী একথা বলেন।
অনুষ্ঠানে পিকেএসএফ’র চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই ছিলো বৈষম্য থাকবে না, মানবাধিকার নিশ্চিত হবে। বঙ্গবন্ধু প্রথম শিশু আইন ১৯৭৪ প্রণয়ন করেন। কল্যাণকামী রাষ্ট্র তৈরির ব্যাপারে সবাইকে নজর দিতে হবে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী মো. মজিবুল হক এমপি বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, সমন্বিত উদ্যোগের অভাবে শিশুশ্রম নিরসন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এরোমা দত্ত এমপি বলেন, একেকটি শিশু আমাদের ইকোনোমিক্যাল ইউনিট। প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ এর মাধ্যমে কারিগরী শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা ও গণস্বাক্ষরতা অভিযান’র নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, ব্যবসাবান্ধব বাজেট নয় শিক্ষাবান্ধব বাজেট চাই!
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এর সচিব কে এম আবদুস সালাম প্যানেল আলোচক এর বক্তব্যে বলেন, শ্রম মন্ত্রণালয় এপর্যন্ত ৮টি সেক্টরকে শিশুশ্রম মুক্ত ঘোষণা করেছে।
প্রাক্তন মুখ্য সচিব ও ঘাসফুল সাধারণ পরিষদের সদস্য আবদুল করিম বলেন, সরকার শিশুদের কল্যাণে যুগপোযোগী আইন প্রণয়ন করেছে। কারিগরি শিক্ষার সম্প্রসারণে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশীপ অথরিটি’র সচিব এবং সি ইও সুলতানা আফরোজ বলেন, শুধুমাত্র ব্রিজ-কালভার্ট বা রাস্তা-ঘাট উন্নয়ন নয়, সামাজিক উন্নয়নেও পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটি’র কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
প্রাক্তন সচিব মাফরুহা সুলতানা, বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগগুলো একটি সামাজিক আন্দোলন হিসেবে নিতে হবে এবং এজন্য জনমত গঠন করতে হবে।
অ্যাকশান এইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ দরকার, স্কিল ডেভেলাপমেন্টে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
ইউসেপ চেয়ারম্যান ও ঘাসফুল এর নির্বাহী সদস্য পারভীন মাহমুদ এফসিএ বলেন, শিশুশ্রমের উপসর্গ নয়, মুল কারণগুলো উদঘাটন করে সেখানে কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদ চট্টগ্রাম এর আহ্বায়ক ও ঘাসফুল এর সিইও আফতাবুর রহমান জাফরী বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসের প্রতিপাদ্যে ‘এখনই সময় এগিয়ে আসুন, মুজিব বর্ষের আহ্বান শিশুশ্রমের অবসান’ এর উপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের নিয়ে কাজ করতে সমন্বিত ও যুগোপযোগী পরিকল্পনা প্রয়োজন।
সবশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. মনজুর-উল-আমিন চৌধুরী আজকের আলোচনা থেকে উঠে আসা বিষয়গুলো চর্চা ও বাস্তবায়নে সকলকে সমন্বিত উপায়ে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন। বিজ্ঞপ্তি