লংগদু-বাঘাইছড়িতে পদ খোয়ালেন ৩৯ আওয়ামী লীগ নেতা

দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি »
আগামীকাল ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় ৯ জন ও বাঘাইছড়ি উপজেলায় ২২ জন নেতাকে সংগঠন থেকে অব্যাহতি আওয়ামী লীগ। শনিবার পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।
লংগদু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাশ বাবু স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি উল্লেখ করা হয়, অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন- ‘ভাসাইন্যাদম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জিয়াবুল হক, মাইনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য বিল্লাল হোসেন,মনছুর উদ্দিন ভূইয়া, কুতুবউদ্দিন, ভাসাইন্যাদাম ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আছর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুচ্ছফা, লংগদু উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা নুর মোহাম্মদ, সদস্য মো. গাউছ আলম এবং রফিকউদ্দিন মেম্বার। এদের বিরুদ্ধে ‘দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেয়ার অভিযোগে এই অব্যাহতি দেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

এদিকে বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস আল মামুন স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের ২২ নেতাকে সংগঠন থেকে একই অভিযোগে অব্যাহতি দেয়ার কথা জানানো হয়েছে। এই উপজেলায় অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়েজ আহমেদ, আমতলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও বিদ্রোহী প্রার্থী সুলতান আহমেদ, উপদেষ্টা মমিনুল ইসলাম, সহসভাপতি ও বিদ্রোহী প্রার্থী মজিবুর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর সোবহান, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রহমান, আইন বিষয়ক সম্পাদক কবির হোসেন, সদস্য শফিউল্লাহ কারিগর, আব্দুল মালেক, বাবর আলী, আমতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সহসভাপতি মনির হোসেন, ইউনিয়ন শ্রমিকলীগের সভাপতি জাহেদ আলী, সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল্লাহ, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রফিক মিয়া, সদস্য আসাদ মিয়া,সদস্য আমিরুল ইসলাম, বাঘাইছড়ির খেদারমারা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ওসমান, ছাত্রলীগের সহসভাপতি রিমন দে, ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক ইমরান হোসেন ও সদস্য সাইফুল ইসলাম।
লংগদু উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল দাশ বাবু জানিয়েছেন, দলীয় শৃংখলা ভঙ্গ করে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান করে দলের মধ্যে বিভেদ ও বিভ্রান্তি তৈরি এবং দলীয় সংহতি নষ্ট করায় এদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। অব্যাহতির চিঠি জেলাকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য।’
বাঘাইছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আল মামুন জানান, দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেয়ায় এদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। স্থায়ী বহিষ্কারের জন্য কাগজপত্র জেলায় পাঠানো হবে।’

এর আগে লংগদু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকার, সহসভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুর রহিমসহ সেই উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে বিদ্রোহী হওয়া ৬ প্রার্থীকে অব্যাহতি দিয়েছিলো রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগ। সেই হিসেবে এই উপজেলায় এখন অবধি অব্যাহতি পেলেন ১৭ জন নেতা। আর বাঘাইছড়িতে অব্যাহতি পেলেন ২২ জন। অর্থাৎ সপ্তম দফার ইউপি নির্বাচনে রাঙামাটির এই দুই উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে দলীয় পদ হারালেন ৩৯ নেতা।