রাঙামাটির সংবাদকর্মী ২ সহযোগীসহ জেলে

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটি »
সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার হুমকিসহ শ্লীলতাহানির অভিযোগে দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এক মামলায় রাঙামাটির এক সংবাদকর্মী ও তার দুইজন সহযোগীকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী আর্জিয়া আলম আঁখির দায়ের করা মামলায় আসামিদের চারজনের মধ্যে তিনজনের জামিন আবেদন বুধবার নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত।
আসামিরা হলেন এশিয়ান টিভির রাঙামাটি প্রতিনিধি আলমগীর মানিক এবং তার দুই সহযোগী মাসুদ পারভেজ নির্জন ও শহিদুল ইসলাম হৃদয়। একইসঙ্গে মামলার আরেক আসামি জাহেদা বেগমকে ২০ হাজার টাকা বন্ড হিসেবে জামিন দেয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারিক তোফায়েল হাসান এ আদেশ দেন।
বাদিপক্ষের আইনজীবী মো. শোয়েব আলী চৌধুরী বলেন, ‘এ মামলায় আসামিরা উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন। হাইকোর্ট তাদের জামিন না দিয়ে ৬ সপ্তাহের ডিরেকশন দিয়ে চট্টগ্রাম সাইবার আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছিলেন। আজ (বুধবার) তারা আদলতে জামিন চাইলে আদালত উভয় পক্ষের শুনানি করে জাহেদাকে আক্তারকে মহিলা হওয়ায় এবং তার শিশুকন্যার কথা বিবেচনায় নিয়ে ২০ হাজার টাকা বন্ডে জামিন দেয়। অন্য আসামি আলমগীর মানিক, হৃদয় ও নির্জনের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।’
উল্লেখ্য, গত ১৯ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপহরণ, ধর্ষণ ও হত্যার হুমকিসহ শ্লীলতাহানির অভিযোগে রাঙামাটির দুই সংবাদকর্মী ও তাদের দুই সহযোগীসহ চারজনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী আর্জিয়া আলম (আঁখি)। তিনি জেলা শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার স্বামী শেখ ইমতিয়াজ কামাল ইংরেজি দৈনিক অবজারভারের জেলা প্রতিনিধি। আঁখির বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ প্রচারণার প্রতিবাদে রাঙামাটি শহরের একাধিক স্থানে প্রতিবাদী মানববন্ধন ও সমাবেশ করে তার সহপাঠীরা।
মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, ‘প্রতারণামূলকভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে আমি ও আমার স্বামীর আইডিতে ছদ্মবেশ ধারণ করে আপত্তিকর, মানহানিকর কমেন্ট করে হেয় প্রতিপন্ন ও ফেসবুক আইডি হ্যাক করার চেষ্টা করে আসামিরা। পরবর্তীতে আইডি হ্যাক করে আমার ক্ষতির উদ্দেশে আইডি থেকে ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে নেয় এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মুছে ফেলে। এছাড়া বিভিন্ন ভুয়া ফেসবুক আইডিতে আমার ছবি প্রকাশ করে আমাকে অতিষ্ঠ করে তোলে। এরপরেও আমাকে এবং আমার স্বামীকে মেরে ফেলে লাশ গুম করে ফেলা, আমাকে সন্ত্রাসী দিয়ে অপহরণ করে ধর্ষণের হুমকি দেয় আসামিরা।’
মামলার চার আসামির মধ্যে জাহেদা বেগম (৪০) বাংলাদেশ টেলিভিশনের রাঙামাটি প্রতিনিধি, মো. আলমগীর মানিক (৩৮) এশিয়ান টেলিভিশনের রাঙামাটি প্রতিনিধি। অন্য দুই আসামি মাসুদ পারভেজ নির্জন (২৪) ও শহিদুল ইসলাম হৃদয় (২৫) আলমগীর মানিকের সহযোগী।