রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে ব্রকলির জাত উদ্ভাবন ও চাষ

শান্তি রঞ্জন চাকমা, কাপ্তাই

কাপ্তাইয়ের রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে বিজ্ঞানীরা দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর গবেষণা করে ব্রকলির কয়েকটি উন্নত লাইন উদ্ভাবনে সফলতা পেয়েছেন। কৃষি গবেষকরা অনেক যাচাই-বাছাইয়ের পর ২০১৪ সালে ব্রকলির একটি লাইনকে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি বারি ব্রকলি-১ নামে কৃষক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য ছাড়পত্র দেয়।
রাইখালী কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শ্যাম প্রসাদ চাকমা বলেন, বারি ব্রকলি-১ অন্যান্য সফল হাইব্রিড ব্রকলি থেকে ভিন্ন। কৃষকরা আবহাওয়ায় ফসল সংগ্রহের পরে মুক্ত পরাগায়নের মাধ্যমে বীজ উৎপাদন করতে পারে। যেহেতু হাইব্রিড ব্রকলির বীজ সংরক্ষণ করা যায় না, সেহেতু সবসময় কোম্পানীর কাছ থেকে কিনতে হয়। কিন্তু এই বারি ব্রকলি-১ মূল বিক্রয়োপযোগী পুষ্পমঞ্জুরী সংগ্রহ করার পর যে পার্শ্বশাখা গুলো বের হয় সেগুলো থেকে ফুল ফুটে এবং বীজ সংগ্রহ করা যায়। প্রতি হেক্টর জমি থেকে প্রায় ৬শত কেজির উপর বীজ সংগ্রহ করা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ব্রকলি দেখতে অনেকটা ফুলকপির মতো, তবে সবুজ রঙের হয়। এটি বিভিন্ন ভাবে খাওয়া যায় এবং বিশেষ করে উপজাতীয়রা এই ব্রকলি সিদ্ধ করে খেয়ে থাকে। এছাড়া সচরাচর এটি ভাজি করে খাওয়া যায়। ছোট্ট বাচ্চারা এটি খুব পছন্দ করে। আর এটি খুব সুস্বাদু একটি সবজি।
বারি ব্রকলি-১ এর বীজ বপনের উপযুক্ত সময় মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য অক্টোবর এবং চারা রোপনের ৫০ দিনের মাথায় পুষ্পমঞ্জুরী বের হওয়া শুরু হয় যা ১৫ দিনের মাথায় খাদ্যপোযোগী হয়। বারি ব্রকলি-১ এর প্রতিটি বিক্রয়োপযোগী পুষ্পমঞ্জুরীর গড় ওজন প্রায় ৩০০-৪৫০ গ্রাম। মূল পুষ্পমঞ্জুরী সংগ্রহের পর যে পার্শ্বশাখা পুষ্পমঞ্জুরী বের হয় সেগুলোও সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। আর কিছু পার্শ্বশাখা পুষ্পমঞ্জুরী বীজ উৎপাদনের জন্য রাখা যায়। বেশ কয়েকজন কৃষক উক্ত কেন্দ্র থেকে বীজ সংগ্রহ করে চাষ করে সফলতা পাচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ব্রকলির বর্তমান বাজারদর বেশি হওয়াতে প্রায় সকল ব্রুকলি চাষী লাভবান হচ্ছেন এবং পরবর্তীতেও তারা বারি ব্রকলি-১ চাষের আশা ব্যক্ত করেছেন।
কৃষি গবেষণা কেন্দ্র সূত্র জানায়, বারি ব্রকলি-১ এর বীজ অফিস চলাকালীন যে কোন সময় অত্র কেন্দ্রের নার্সারি থেকে সংগ্রহ করা যাবে। আর মৌসুমের সময় চারা সংগ্রহ করা যাবে।