রসুনের বাজারে স্বস্তি

মিলছে কেজিপ্রতি ১০০ টাকায়

নিজস্ব প্রতিবেদক »

রমজানের আগেই বাজারে দাম কমতে শুরু করছে আমদানি করা রসুনের। আমদানি সংকটের দোহাই দিয়ে গত দুই মাস ধরে এ মসলাজাত পণ্যটির মূল্য দুই’শ ছাড়িয়েছিল। এখন সরবরাহ ভালো হওয়ায় দাম কমতে শুরু করেছে। গতকাল সোমবার নগরীর ভোজ্যপণ্যের বৃহত্তম বাজার খাতুনগঞ্জ ঘুরে দেখা গেছে, গত তিনদিনের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরা বাজারে রসুনের দামে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। দুইদিন আগেও আমদানি করা বড় রসুনের দাম ছিল পাইকারিতে প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা ও খুচরাতে ২১০ থেকে ২২৫ টাকা।

গতকাল পাইকারিতে রসুনের বাজারদর ছিল প্রতি কেজি ৯৫ থেকে ১০২ টাকা। অর্থাৎ গত তিনদিনের ব্যবধানে রসুনের দাম কমেছে কেজিতে ৮০ থেকে ৯০ টাকা। গতকাল খুচরা বাজারে আমদানি করা রসুন বিক্রি হয়েছে ১১০-১২৫ টাকায়। আর দেশি রসুন পাইকারি ও খুচরায় মিলছে প্রতি কেজি ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে।

খাতুনগঞ্জের বাজারের হামিদউল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পেঁয়াজ-রসুন ব্যবসায়ী মো. ইদ্রিছ বলেন, আমদানি করা রসুনের দাম কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ৯০ টাকা কমেছে। সরবরাহ ভালো থাকাতেই রসুনের দাম কমে এসছে। রমজানে কয়েক টাকা বাড়তে পারে। তবে তা নির্ভর করছে রসুনের বাজারের সরবরাহের উপর।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মতে রসুনের বাজারের দাম চড়া দেখালেও প্রকৃতপক্ষে খাতুনগঞ্জের বাজারে আরও কমদামে রসুন মিলছে।

গতকাল সংস্থাটির হিসাবে, দেশি রসুন ১৩৩ শতাংশ দাম বেড়ে ৯০ থেকে ১২০ টাকা ও আমদানি করা রসুন মানভেদে ১২০ থেকে ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। যার ১৫ থেকে ২০ টাকা কমে বাজারে মিলছে একই মানের রসুন।

এদিকে গত তিনদিনের ব্যবধানে পেয়াঁজের দাম কমেছে কেজিপ্রতি ৪ থেকে ৫ টাকা। পেয়াঁজ ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ পেঁয়াজ রয়েছে। রমজানে কোন ধরনের পেঁয়াজ সংকট হবে না বলে জানান পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা।

গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৬ থেকে ১৮ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজ ২৭ থেকে ২৯ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা উভয়ই তিনদিন আগে ৩০ থেকে ৩২ টাকা দামে বিক্রি হয়েছিল।

চাক্তাই ব্যবসায়ী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফোরকান বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ রয়েছে। রসুনের মতো খুব বেশি না কমলেও গত তিনদিনে বাজারে পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে দুই থেকে তিন টাকা কমেছে।

রেয়াজউদ্দিন বাজারের পদ্মা বাণিজ্যালয়ের মালিক মো. আকতার হোসেন বলেন, দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ ভালো থাকায় আমদানি করা পেঁয়াজের আগ্রহ কমছে। তবে গত দুদিন ধরে বাজারে চায়নার রসুন আসা শুরু হয়েছে। ফলে হঠাৎ রসুনের বাজারে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। আজ (সোমবার) চায়নার রসুন বিক্রি করেছি ১০৬ থেকে ১০৮ টাকা দামে। আর দেশি পেঁয়াজ ২৪ থেকে ২৬ টাকা ও আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি করেছি ৩০ টাকা।

রমজানে পেঁয়াজ ও রসুনের যোগান নিয়ে খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ পেঁয়াজ ও রসুন এসছে। রমজানে পেঁয়াজ-রসুনসহ নিত্যপণ্যের দাম আরো কমে আসবে। কারণ এতদিন ডলার সংকটের কারণে আমরা এলসি খুুলতে পারিনি। এখন ব্যবসায়ীরা এলসি করতে পারছে। আমদানি করা পণ্যও খাতুনগঞ্জে আসা শুরু হয়েছে। এ রমজানে নিত্যপণ্যে আর দাম বাড়ার সম্ভাবনা নেই।