মোছলেম উদ্দিন ছিলেন দুঃসময়ের কাণ্ডারি

স্মরণসভায় ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক »

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মোছলেম উদ্দিনকে কোনো প্রলোভন তার আদর্শ, সততা ও সংগ্রাম থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। শত জেল-জুলুম, নির্যাতনের মধ্যেও তিনি আওয়ামী লীগ ত্যাগ করেননি। তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারি। নবপ্রজন্মকে তার জীবনাদর্শ অনুসরণ করার আহ্বান জানান সেতুমন্ত্রী।

তিনি গতকাল শনিবার বিকালে নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সাবেক সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের দেশের রাজনীতিকে এখনো সাধারণ মানুষ ও ভালো লোকদের কাছে আর্কষণীয় করে তুলতে পারিনি। নানা কারণে রাজনীতি প্রশ্নবিদ্ধ। সমাজের তরুণ, মেধাবীদের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার সুযোগ দিতে হবে। অসৎ নেতা-কর্মী আমাদের প্রয়োজন নেই। বঙ্গবন্ধুর সাহস, সততা ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা তাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু ও তার কন্যা শেখ হাসিনার কাছে শেখার মতো অনেককিছু আছে। আমাদের বাইরে যেতে হবে না। আজকে সততা, পরিশ্রম ও সাহসের গুণে শেখ হাসিনা বাংলার অবিসংবাদিত কাণ্ডারি।

মোছলেম উদ্দিনের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘মানুষের জীবন কচু পাতার উপর শিশির বিন্দুর মতো। এই যে আমাকে দেখছেন আমিতো অলৌকিকভাবে বেঁচে গিয়েছি। মোছলেম ভাই মারা যাওয়ার তিনদিন আগেই বলেছিলেন, তিনি চট্টগ্রামে দলকে আরো চাঙা করে তুলবেন। জীবনের শেষ মুহূর্তে দলের প্রতি তার সেই ভালবাসা ছিল। অথচ ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে আমি জানতাম তাকে মৃত্যু পিছু নিয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের রাজনীতিবিদদের হতে হবে আদর্শ শিক্ষক। যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। মানুষের হৃদয়ে স্থান লাভ করতে হবে। শ্রদ্ধা পাওয়ার মতো যোগ্যতাও অর্জন করতে হবে।

আ জ ম নাছির উদ্দীন ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের নাম উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে নাছির, নওফেল আছে। তাদের তরুণ তুর্কীদের নিয়ে আমরা মাঝে মাঝে দুশ্চিন্তায় পড়ি। যখন পত্র-পত্রিকায় দেখি দুই গ্রুপের মধ্যে পাল্টাপাল্টি, এটা কেন হবে? একই দল করি, একই আদর্শের কর্মী, পাল্টাপাল্টি কেন হবে? পত্র-পত্রিকায় এসব দেখে আমরা লজ্জা পাই।’

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজ ছাত্রলীগের নামে দেশে যা হচ্ছে তা আমাদের লজ্জা দেয়। প্রধানমন্ত্রী নতুনদের দিয়ে দলকে সাজাবেন। নতুন নেতৃত্বে ছাত্রলীগের সুনাম টিকিয়ে রাখা হবে। ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করবে, টেন্ডারবাজি করবে, র‌্যাগিং করবে, সেই সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। কেনো অনৈতিক কার্যক্রমের জন্য শেখ হাসিনা কাউকে ছাড় দেবেন না।’

মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলনের গতি কমে গেছে। গলার জোর বেড়ে গেছে। ১০ তারিখ দেশ দখল করে, তারপরদিন খালেদা জিয়া দেশ চালানোর কথা। সেই লাল কার্ড থেকে নীরব পদযাত্রা। এর পরে হয়েছে মানববন্ধন। তাদের গলার যত জোর, তত আন্দোলন নেই।’

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্মরণসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি।

ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, ‘মোছলেম উদ্দিন আওয়ামী লীগের একজন কা-ারি ছিলেন। যিনি সাধারণ মাঠপর্যায়ের কর্মী থেকে সাংসদ হয়েছেন। তার জীবনে একটি আশা ছিল সংসদ সদস্য হবেন। আল্লাহ তার সেই আশা পূরণ করেছেন।’

স্মরণসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াশিকা আয়েশা খান, ত্রাণ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।