মাতামুহুরী নদীর ভাঙনে ছোট হচ্ছে জনপদের গ্রাম

নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া  »

চকরিয়ার বুকচিরে প্রবাহিত প্রমক্তা মাতামুহুরী নদী বর্তমানে ভয়াবহ নাব্যতা সংকটে পড়েছে। এ অবস্থায় গভীরতা কমে যাওয়ার ফলে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ডুবোচর জেগে উঠেছে। এতে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক চলাচল বিঘিœত হবার কারণে বর্ষাকালে দুইতীর উপচে  লোকালয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ঢলের পানি। পাশাপাশি অব্যাহত রয়েছে ভাঙন তা-বও। এভাবে বছরে পর বছর ভাঙন তা-বে ক্রমান্বয়ে ছোট হচ্ছে উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ। নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ফসলী জমি, গ্রামীণ সড়ক, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিম খানাসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এতে আতঙ্কে ভুগছেন নদীর তীর এলাকায় বসবাসরত হাজারো পরিবার। অবশ্য জনপ্রতিনিধিরা অভিযোগ তুলেছেন, প্রতিবছর নদীর ভাঙ্গন  ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোটি কোটি টাকা বরাদ্দে বেসুমার উন্নয়ন কাজ অব্যাহত রাখলেও জনগনের সুরক্ষা নিশ্চিতে স্থায়ীভাবে টেকসই  কোন ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অস্থায়ী প্রকল্প গ্রহণ করার কারণে নদীর ভাঙ্গনের তীব্রতায় তা বছরের মধ্যে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার ও বান্দরবান বিভাগের কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, মাতামুহুরী নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধে একাধিক টেকসই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য উধর্বতন দপ্তরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থবরাদ্দের অভাবে চকরিয়া উপজেলার অধিক ঝুঁিকপুর্ণ এলাকায়  টেকসই ও বড় আকারের প্রকল্প  নেওয়া যাচ্ছে না।সম্প্রতি সময়ের ভারী বর্ষণ পরবর্তী পাহাড়ি ঢলে ভাঙ্গনের তা-বে চকরিয়ার কৈয়ারবিল ইউনিয়নের দ্বীপকুল ও ভরন্যারচর গ্রামের অন্তত ৬টি বসতঘর নদীতে বিলীন হয়েছে।নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কৈয়ারবিল ইউপির প্রয়াত চেয়ারম্যান শহীদ হোছাইন চৌধুরীর ছেলে সমাজসেবক আফজল উর রহমান চৌধুরী।    সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, দুইযুগের বেশিসময় ধরে মাতামুহুরী নদীর তীরবর্তী জনপদের এলাকা সাহারবিল ইউনিয়নের বাটাখালী ব্রীজের উত্তর প্রান্তে নাপিতের টোড়া, ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের দিগরপানখালী পয়েন্ট, চকরিয়া পৌরসভার শহররক্ষা বাধ, কোচপাড়া, পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল বারী পাড়া, কাজীরপাড়া, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের তরছঘাটা, জলদাশপাড়া ও বাটাখালী সেতুর দুই পাশ, বিএমচর ইউনিয়নের বেতুয়া বাজার সেতু পয়েন্ট, কন্যারকুম, কুরিল্যার তলা, বরইতলী ইউনিয়নের পহরচাঁদা, গোবিন্দপুর, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের খিলছাদক, লামারপাড়া, মন্ডলপাড়া, জলদাসপাড়া, পূর্ববড় ভেওলার  সেকান্দর পাড়া, শমসু মিয়ার বাজারস্থ জলদাশপাড়া পয়েন্ট, কোনাখালী ইউনিয়নের কাইদ্যারডিয়া, সিকদাপাড়া পয়েন্ট ও মরং স্টেশন (ইউনিয়ন পরিষদের সামনে), কাকারা ইউনিয়নের কামাল উদ্দিন মাস্টারের ঘাটা, লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের রোস্তমআলী চৌধুরী পাড়া, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের কৈয়ারবিল ইউনিয়নের দ্বীপকুল ও ভরন্যারচরের ও চিরিঙ্গা ইউনিয়নের একাধিক জনপদ নদীর ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, মাতামুহুরী নদীর ভাঙ্গনের তা-বে তীর এলাকার পরিবারগুলো গৃহহারা হচ্ছে। এখনো উপজেলার বিভিন্ন জনপদে ভাঙন তা-ব অব্যাহত রয়েছে।