মাঠে আওয়ামী লীগ না’তে অনড় বিএনপি কৌশলী জামায়াত

মার্চেই ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

মো. আবু মনসুর, ফটিকছড়ি »
জাতীয় দ্বাদশ নির্বাচন শেষ হতে না হতেই শুরু হয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি। আগামী মার্চের শুরুতে উপজেলার প্রথম ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপের তালিকায় রয়েছে ফটিকছড়ি উপজেলাও।
এবারের উপজেলা নির্বাচন ভিন্ন হতে চলেছে। বিগত সময়ে বিএনপি নির্বাচনে আসলেও এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। ক্ষমতাসীন দলও এবার তাদের প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হতে ইতোমধ্যে মাঠে নেমে পড়েছেন একাধিক প্রার্থী। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজন। ইতোমধ্যে নেতাদের আশীর্বাদ পেতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তরে ধর্না দিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। এবারে উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করতে ইচ্ছুক ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন মুহুরি। সর্বশেষ তিনি ২০১৯ সালের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন। সেবার তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হোসাইন মো. আবু তৈয়বের কাছে হেরে যান। তবে, উপজেলা জুড়ে তার রয়েছে কর্মী বাহিনী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের গ্রিন সিগনাল রয়েছে আমার প্রতি। দলীয় হাইকমান্ড আগে থেকে কাজ করতে বলেছেন। আমি কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি ফটিকছড়ির আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সাধারণ জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে।
সাবেক জেলা আওয়ামী লীগের নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ বাকেরও চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন বলে জানান। তিনি ফটিকছড়ি বিভিন্ন প্রান্তে তার কর্মী নিয়ে কাজ করছেন। এছাড়া চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল বশর। তিনি ইতোমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় সামাজিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য শিল্পপতি সাদাত আনোয়ার সাদী। তার কর্মীরা মনে করেন তার অনেক অবদান রয়েছে ফটিকছড়িতে। দুই থানায় পুলিশের জন্য দুটি গাড়ি দান, কোভিড হাসপাতালের জন্য অনুদান, রাস্তাঘাটের কাজ, নিয়মিত অসহায়দের সাহায্য করেন তিনি। চেয়ারম্যান পদে লড়বেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ছালামত উল্লাহ চৌধুরী শাহীন, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট উত্তম কুমার মহাজন, জাতীয় পার্টির আফসার উদ্দিন চৌধুরী তবে, উপজেলার পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানের পদে অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন ইসমাইল মজুমদার, মাস্টার রতন সহ অনেকেই। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার কথা শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জেবুন নাহার মুক্তা, নুপুর আক্তার, খাদিজা বেগম।
এদিকে জাতীয় নির্বাচনে মতো উপজেলা নির্বাচনেও আসবে না বিএনপি। উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক কর্নেল আজিম উল্লাহ বাহার বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত আমরা আন্দোলনে আছি। এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন করা সম্ভব না। নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়ার বিষয়ে দলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। অন্যদিকে বিএনপির জোট সঙ্গী জামায়াতের অনেক নেতা নির্বাচনে আসার কথা শোনা যাচ্ছে।’
ফটিকছড়ি জামায়াতের একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, যদি দলীয়ভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হয় তাহলে নির্বাচন করবেন তারা। জামায়াতের ওই তালিকায় আছেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আলমগীর মোহাম্মদ ইউনুচ। এর আগে তিনি ২০১৪ সালে উপজেলা নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছিলেন। তালিকায় রয়েছে সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নুর মুহাম্মদ আল কাদেরীর নামও। তিনি ২০০৯ ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন ভোটে জয় লাভ করেন। উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিষয় না জানালেও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে অ্যাডভোকেট ইসমাইল গণির নামও জানান জামায়াতের ওই সূত্র।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা উদয় অরুন ত্রিপুরা বলেন, মার্চ মাসের শুরুতে উপজেলা পরিষদের প্রথম দফায় নির্বাচন হবে। ফটিকছড়ি এ তালিকায় স্থান রয়েছে।