ভূমিকম্পে চট্টগ্রাম অঞ্চলে ঝাঁকুনি

ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত

এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ৫ মাত্রার উপরে চারদফা ভূমিকম্প
মাটির কম গভীরে হওয়ায় ঝাঁকুনি
বেশি অনুভূত হয়েছে : আবহাওয়া অধিদপ্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভূমিকম্প একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আর তাতে আতঙ্কও বাড়ে। গত পাঁচ মাসে ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে মাঝারি মাত্রার চারদফা ভূমিকম্প হলো। এর সর্বশেষ সংযোজন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা ৭ মিনিট ১৫ সেকেন্ডে ৫ দশমিক ৩ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প। ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে ভারতের মিজোরাম এলাকায় ভূমিকম্পের উৎপত্তি। এর আগে একই এলাকায় গত ২১ জুন ৫.১ ও ৫.৮ রিকটার স্কেলের দুই দফা ভূমিকম্প এবং ১৬ এপ্রিল ৫ দশমিক ৯ রিকটার স্কেলের ভূমিকম্প হয়েছিল।
এদিকে গতকালের ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়েছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। চট্টগ্রাম থেকে ভূমিকম্পের উৎপত্তি কেন্দ্রের দূরত্ব ছিল ১৯৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং ঢাকা আগারগাঁও থেকে ভূমিকম্প কেন্দ্রের দূরত্ব ছিল ৩২৭ কিলোমিটার পূর্ব দক্ষিণ-পূর্বে। কিন্তু ভূমিকম্পটি উৎপত্তির পরপরই চট্টগ্রাম অঞ্চলে দুই দফায় প্রচ- ঝাঁকুনি অনুভূত হয়। এতে অনেকের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে এর চেয়ে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলেও এতো বেশি ঝাঁকুনি অনুভূত হয়নি। এর কারণ কি জানতে চাইলে আবহাওয়া অধিদপ্তর ঢাকা কেন্দ্রের ভূ-কম্পবিদ মমিনুল ইসলাম বলেন,‘ এবারের ভূমিকম্পটি মাটির কম গভীরে উৎপত্তি হওয়ায় আশপাশের এলাকায় বেশি কম্পন অনুভূত হয়। মাটির যতো উপরে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হবে এর আশপাশের এলাকায় ততো বেশি ঝাঁকুনি হবে। আর যতো গভীরে ভূমিকম্প হবে ততো বেশি দূরে কম্পন অনুভূত হবে।’
তিনি আরো বলেন, ৫ দশমিক ৩ রিকটার স্কেলের এই ভূমিকম্পে ঢাকায় কিন্তু কম্পন অনুভূত হয়নি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের পূর্ব পাশ দিয়ে একটি প্লেট বাউন্ডারি রয়েছে। এজন্য এই এলাকায় প্রায়ই ভূমিকম্প হয়ে থাকে। গতকালের ভূমিকম্পটিও একই কারণে হয়েছে।
ভূমিকম্পবিদদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাটির গভীরে ভূমিকম্প সংগঠিত হওয়া একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আর এর মাধ্যমে মাটির অভ্যন্তর থেকে শক্তি বের হয়ে আসে। কয়েকশত বছর পরপর বড় মাত্রার ভূমিকম্প হয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, সারবিশ্বে প্রতিবছর দুই হাজার বার ভূমিকম্প হয়। এদের মধ্যে বছরে ১০০ ভূমিকম্প তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী হয়ে থাকে। ছোটো-বড় ২৭টি প্লেট নিয়ে গঠিত পৃথিবী প্রতিনিয়ত গতিতে থাকার কারণে প্লেটগুলোর প্রান্তসীমায় ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়ে থাকে। ইন্ডিয়া ও বার্মা প্লেটের মুখোমুখি সংঘর্ষের কারণেই টেকনাফ থেকে হিমালয়ান পর্বতমালা পর্যন্ত গঠিত হয়েছিল হিমালয় পর্বতমালা।