ব্যাটারিচালিত রিকশা চলে কিসের ভিত্তিতে

এই মুহূর্তে বাংলাদেশে কত লক্ষ ব্যাটারিচালিত রিকশা সড়কে চলাচল করছে তার হিসাব কারো কাছে নেই। চট্টগ্রাম নগরীর মূল সড়কে কম দেখা গেলেও অলিগলি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অনুমতিহীন রিকশাগুলো। আর এসব চালকের অধিকাংশই শিশু-কিশোর। তাদের বেপরোয়ার কারণে প্রতিদিনই কোনো না কোনো দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে।
পত্রিকায় বলা হয়েছে, এসব রিকশার কোন ফিটনেস ও রুট পারমিট নেই। চালকদেরও নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। যে কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। রিকশা হিসেবে স্বীকৃতি না পেলেও নগরীর আনাচে কানাচে এসব রিকশার দৌরাত্ম্য থামানো যাচ্ছে না। অদক্ষ চালকদের অনেকেরই প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যবহারিক শিক্ষা না থাকায় যাত্রীদের সাথে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকে। এদের বিরুদ্ধে জোর করে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগও রয়েছে।
২০১৮ সালে চট্টগ্রাম মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধ করার জন্য দুটি সংগঠনের পক্ষ থেকে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়েছিল। ব্যাটারিচালিত রিকশার বিপক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরী রিকশা মালিক পরিষদ রিট দায়ের করেছিল। তার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশনা দেন। পরবর্তীতে এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করে ব্যাটারিচালিত রিকশা মালিক সমিতি। আপিল বিভাগের সাত সদস্যের বেঞ্চ হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন। এরপর থেকে চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তারপরও এই রিকশা চলছে কিসের ভিত্তিতে তা জানা দরকার।
চট্টগ্রাম মহানগরীর প্যাডেল রিকশা মালিক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিকদের বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীতে প্যাডেল চালিত রিকশার সংখ্যা ৭০ হাজার । এসব রিকশা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে বাৎসরিক কর দেয় ৭০ লক্ষ টাকার মত। আর ৭০ হাজার রিকশার সাথে জীবিকা নির্বাহে জড়িত রয়েছেন ১ লক্ষ ৩০ হাজারের মত চালক। অন্যদিকে, সরকারি কোন কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়ে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন অলি-গলি ও মহাসড়কে ব্যাটারি রিকশা চলছে। এতে সরকার রাজস্ব হারালেও স্থানীয় নেতা, থানা-প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে ব্যাটারি রিকশাগুলো।’
পত্রিকান্তরে জানা গেছে, এই রিকশা মালিকচক্র রাতের বেলা অবৈধভাবে ব্যাটারি চার্জ করে। এ রকম কয়েক হাজার গ্যারেজ রয়েছে নগরীর বিভিন্ন এলাকায়। এরা চুরি করে বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেও সে বিল কারো না কারো ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে ।
এ বিষয়ে প্রশাসনের কড়া নজরদারির দরকার আছে। কারণ এমনিতেই দেশে গণপরিবহন খাতে কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নেই। তার ওপর এ ধরনের অব্যবস্থাপনা ও সিদ্ধান্তহীনতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। সবকিছুরই একটি নিয়ম থাকা দরকার। ফলে প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এমন গাড়ি আদৌ চালাতে দেওয়া হবে কিনা। যদি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় তাহলে একদম বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আর চলতে দিলে গাড়ির নিবন্ধন, চালকের প্রশিক্ষণ এবং রুট পারমিটের ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম মেনে চলতে হবে।