বৈরি আবহাওয়া, তবুও সৈকতে পর্যটকের ভিড়

টানা তিনদিনের ছুটি উদযাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »

টানা তিনদিনের ছুটিতে কক্সবাজারে অবকাশ যাপনে ছুটে এসেছেন হাজার হাজার পর্যটক। দেশীয় পর্যটকদের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদেরও দেখা গেছে সমুদ্র সৈকতে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার থেকে টানা ৩ দিনের ছুটি শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকেই থেমে থেমে ছিল গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। বন্দরগুলোতে ছিল ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত। তবুও সৈকতের লাবণী, কলাতলী, সুগন্ধা বিচসহ প্রতিটি পয়েন্টে ছিল পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়। আর উত্তাল সাগরে পর্যটকদের সমুদ্রস্নানে নিরাপত্তা সর্বদা সজাগ করেছে লাইফ গার্ড কর্মী ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।

সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, সাগর উত্তাল, একের পর এক বিশাল বিশাল ঢেউ আছড়ে পড়ছে উপকূলে। আর এই ঢেউয়ে মেতেছেন ভ্রমণপিপাসুরা। কেউ এসেছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে, কেউ এসেছেন প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে, আবার কেউবা এসেছেন বন্ধুদের সঙ্গে। সবারই প্রশান্তি যেন সাগরের নোনাজলে।

হবিগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক দম্পতি পলাশ শর্মা ও মিনা বলেন, চাকরিতে তেমন একটা ছুটিও পাওয়া যায় না। এবার টানা তিনদিনের ছুটি পাওয়ার সাথে সাথেই চলে এলাম প্রিয় কক্সবাজারে। এখানে খাবারের দাম ও হোটেলের রুম ভাড়া সহনীয় পর্যায়ে আছে বলে মনে হয়েছে। যা গত বছরের ডিসেম্বরের তুলনায় অনেকটা কম।

সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের বালিয়াড়িতে ঢাকার মিরপুর থেকে আসা রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ছুটি পেলাম, তাই স্ত্রীকে নিয়ে কক্সবাজারে চলে আসা। এখানে এসে দেখি অনেক মানুষ, আসলে এটা আশা করিনি এতো মানুষ কক্সবাজারে আসবে। আসলে করোনা পরিস্থিতির কারণে বিশ্ব থমকে গিয়েছিল। এখন অনেকটা স্বাভাবিক।

বিচকর্মীদের সুপারভাইজার মাহবুব আলম বলেন, সৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে অনেক পর্যটক হয়েছে। এতো বিরূপ আবহাওয়ায়ও এভাবে পর্যটক বেড়ে যাবে তা কল্পনাও করিনি। সকাল থেকে সৈকতের ৩-৪টি পয়েন্ট থেকে পর্যটকরা নামছেন। কেউ কেউ দলবদ্ধ হয়ে সৈকতে নামছেন, কেউ ঘোড়ায় চড়ে মজা করছেন, ছবি তুলছেন আবার কোনো কোনো মা-বাবা বাচ্চাদের নিয়ে পানির কাছে মাটির ঘর বানিয়ে আনন্দে মেতেছেন। তাদের সচেতন করতে মাঠে রয়েছি। মাইকিংয়ের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সচেতনতার ব্যাপারে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

সি সেইফ লাইফ গার্ডের সদস্য মো. ইউসুফ জানান, ওয়াচ টাওয়ার থেকে পানিতে নামা পর্যটকদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রেখেছি। কেউ যেন গভীর পানিতে না নামেন সে বিষয়ে সজাগ করা হচ্ছে। নিজেরা পানিতে গিয়ে তাদের সচেতন করছি। আর দূরে অবস্থান করা পর্যটকদের বাঁশি দিয়ে অ্যালার্ট করছি।

কক্সবাজার গেস্ট হাউস রেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার জানান, হোটেল ভাড়াও সহনীয় পর্যায়ে আছে।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ নজরদারিতে রয়েছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। পর্যটন স্পটগুলোতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সাদা পোশাকধারী টিমসহ কয়েকটি টিমে কাজ করছে।