বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবি : নিহতদের ক্ষতিপূরণ ও দোষীদের সাজা দেওয়া হোক

এমএল মর্নিং বার্ড নামের একটি লঞ্চ সোমবার সকালে মুন্সীগঞ্জ থেকে অর্ধ শতাধিক যাত্রী নিয়ে সদরঘাটের দিকে আসছিল। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শ্যামবাজারের কাছে পৌঁছালে চাঁদপুর রুটের ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় সেটি ডুবে যায়।

সকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর গোলাম সাদেক সাংবাদিকদের বলেন, দুই লঞ্চের কর্মীদের অসতর্কতায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে তারা মনে করছেন।

তবে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে যেভাবে ঘটনাটি দেখতে দেখা গেছে তাতে মনে হয়েছে ধাক্কা দেওয়ার বিষয়টি ‘পরিকল্পিত’।

এ দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) মো. রফিকুল ইসলাম খানকে আহ্বায়ক এবং বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা) মো. রফিকুল ইসলামকে সদস্য সচিব করে গঠিত এই কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ডুবে যাওয়া লঞ্চে তল্লাশি চালিয়ে এই কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়।

এই নিয়ে লঞ্চডুবির ঘটনায় ৩৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হলো।

বর্ষা মৌসুমে এলেই দেশে লঞ্চডুবির মতো ঘটনা বেড়ে যায়। প্রতিবছর লঞ্চ দুর্ঘটনায় প্রচুর প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও জড়িতদের বিরুদ্ধে কেমন ব্যবস্থা নেওয়া হয় তা আর জানার সুযোগ থাকে না। নিয়মানুযায়ী তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তদন্ত কমিটির রিপোর্টে কী থাকে তাও অধিকাংশ সময় জানা যায় না। ফলে দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকে, মানুষের প্রাণ যেতেই থাকে।

সোমবারের দুর্ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।  তা দেখে নৌ প্রতিমন্ত্রী দুর্ঘটনাকে পরিকল্পিত বলে আখ্যা দিয়েছেন। আশা করি সরকারের পক্ষ থেকে বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের সাজা প্রদানের ব্যবস্থা করবে।

কোনো আশ্বাস বা সাহায্যই প্রিয়জন হারানোর বেদনা ও শোককে ঢাকতে পারে না। তারপরও যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের জন্য গভীর শোক জ্ঞাপন করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।