বিসিএস পরীক্ষায় সাদ-বাঁধনের ‌‘রেহানা মরিয়ম নূর’!

সুপ্রভাত বিনোদন ডেস্ক »

কান হয়ে শুধু অস্কারে নয়, এবার সাদ-বাঁধনের নাম উঠলো খোদ বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রেও! অনেকের চোখে বিষয়টি মামুলি মনে হলেও, চলচ্চিত্রজনের কাছে খবরটি বাড়টি বার্তা বহন করে। কারণ, বাংলা চলচ্চিত্র কিংবা নির্মাতা-শিল্পীদের নিয়ে জাতীয় শিক্ষাক্ষেত্রে এমন কোনও ছাপ সচরাচর পড়ে না।
২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হলো ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। যেখানে একটি প্রশ্ন রয়েছে এমন: ‘রেহেনা মরিয়ম নূর’ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন-
ক. জেরেমি চুয়া খ. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ
গ. রাজীব মহাজন গ. আজমেরী হক বাঁধন।
এমন প্রশ্নের রেশ ধরে শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর থেকে ফেসবুকে উচ্ছ্বাস ছড়াচ্ছেন সিনেমা সংশ্লিষ্টরা। যুক্ত হয়েছেন সিনেপ্রেমীরাও। খবরটি প্রথম প্রকাশ করেন ‘ঢাকা অ্যাটাক’ ছবির শিল্পনির্দেশক আসিফ চৌধুরী। এরপর মুগ্ধতা প্রকাশ করেন নির্মাতা শিহাব শাহীনসহ অনেকে। আবার ছবিটির নামের বানান (রেহেনা) ভুল লেখায় সমালোচনাও হচ্ছে প্রশ্নকর্তাদের!
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সব সেটে এই প্রশ্নটি স্থান পেয়েছে। কোথাও ৫০ নম্বর প্রশ্ন, কোথাও রয়েছে ৮৭ নম্বরে।
এমন খবরে মুগ্ধতা প্রকাশ করা স্বাভাবিক টিম ‘আরএমএন’-এর। তবে মুগ্ধতার চেয়ে বিস্ময় প্রকাশ করলেন এর প্রধান নেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। বললেন, ‘গতকালই (২৮ অক্টোবর) আমি দিল্লি থেকে ঢাকায় নামলাম। এসে টিম থেকে জন্মদিনের সারপ্রাইজ গিফট পেলাম ছবিটির মুক্তির তারিখ। বিশ্ব মাতিয়ে ১২ নভেম্বর আমরা মুক্তি পাচ্ছি দেশের প্রেক্ষাগৃহে! এমন খবরের একদিনের মাথায় পেলাম বিসিএস-চমক! কি বলবো, বুঝতে পারছি না। এটুকু বুঝি, ভালো সিনেমার প্রতিধ্বনি বা প্রতিচ্ছবিগুলো সম্ভবত এমনই হয়। নানা মাধ্যমে নানা মাত্রায় ভেসে ভেসে আসে ভালোবাসাগুলো।’
এর আগে বলিউডের নামজাদা নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজের ডাকে গত ২৬ সেপ্টেম্বর ‘খুফিয়া’ ছবির লুক টেস্টের জন্য ঢাকা থেকে মুম্বাই যান বাঁধন। ফিরে এসে ফের ১০ অক্টোবর শুটিংয়ের জন্য দিল্লি উড়াল দেন। ১১ অক্টোবর থেকে শুরু করেন শুটিং। প্রথম অংশের কাজ শেষ করে ২৮ অক্টোবর ফেরেন ঢাকায়। এতে বাঁধন পর্দা শেয়ার করছেন বলিউড অভিনেত্রী টাবুর সঙ্গে।
তারও আগে কান উৎসবের অফিসিয়াল সিলেকশনে প্রথম বাংলাদেশি ছবি হিসেবে যুক্ত হয় সাদ-বাঁধনের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। সে আসর থেকে কোনও পুরস্কার না জুটলেও বিশ্ব চলচ্চিত্র বাজারে দারুণ প্রশংসা কুড়ায় ছবিটি। তারই সূত্র ধরে বিশ্বের নানা উৎসব হয়ে এবার যাচ্ছে অস্কারে। ফাঁকে ১২ নভেম্বর থেকে ছবিটি মুগ্ধ করার সুযোগ পেলো দেশীয় দর্শকদের।
ছবির গল্প আবর্তিত হয়েছে বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষক রেহানা মরিয়ম নূরকে কেন্দ্র করে। সেখানে রেহানা একজন মা, মেয়ে, বোন ও শিক্ষক। ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ তার জীবন। এক সন্ধ্যায় কলেজ থেকে বের হয়ে তিনি এমন একটি ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন, যা তাকে প্রতিবাদী করে তোলে। এক ছাত্রীর পক্ষ হয়ে সহকর্মী এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে বাধ্য হন রেহানা। একই সময়ে তার ৬ বছরের মেয়ের বিরুদ্ধে স্কুল থেকে রূঢ় আচরণের অভিযোগ করা হয়। এমন অবস্থায় রেহানা তথাকথিত নিয়মের বাইরে থেকে সেই ছাত্রী ও তার সন্তানের জন্য ন্যায়বিচার খুঁজতে থাকেন।
ছবির চিত্রনাট্য লিখেছেন সাদ নিজেই। এতে রেহানা মরিয়ম নূর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আজমেরী হক বাঁধন। ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন আফিয়া জাহিন জাইমা, কাজী সামি হাসান, আফিয়া তাবাসসুম বর্ণ, ইয়াছির আল হক, সাবেরী আলম। পোটোকল ও মেট্রো ভিডিও’র ব্যানারে ছবিটি প্রযোজনা করেছেন সিঙ্গাপুরের জেরেমি চুয়া। নির্বাহী প্রযোজক এহসানুল হক। সিনেমাটোগ্রাফি করেছেন তুহিন তুমিজুল। সহ-প্রযোজনা করেছে সেন্সমেকারস প্রোডাকশন।