বাবা পরিকল্পনাকারী, ছেলে দস্যু সর্দার

সুপ্রভাত ডেস্ক »

বঙ্গোপসাগর ও বাঁশখালীতে টানা ৪৮ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে র‌্যাব ১২ দস্যুকে গ্রেফতার করেছে। র‌্যাবের দাবি, দস্যু কার্যক্রমের পরিকল্পনাকারী আনসার মাঝি। তিনি বাঁশখালীর বড়গুনা এলাকার একজন স্থানীয় মেম্বার। তিনি নিজের ছেলে আনোয়ারকে দস্যুদের সর্দার বানিয়ে বোট ডাকাতি করার জন্য সাগরে পাঠান। খবর ঢাকা পোস্টের।

গতকাল শনিবার বিকেলে চান্দগাঁও ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে ১২ দস্যুকে গ্রেফতারের বিষয়টি জানান র‌্যাব-৭ অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ। তিনি বলেন, সাগরে তিনটি বড় জলদস্যু গ্রুপ কাজ করছে। একটি বাঁশখালী গ্রুপ নামে পরিচিত। এ গ্রুপের দস্যুদের ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া, পেকুয়া ও মহেশখালী গ্রুপ নামে আরও দুটি গ্রুপ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বাঁশখালী গ্রুপে মাছ লুটের সঙ্গে জড়িত তিনটি চক্র কাজ করে। সাগরে আনোয়ার হচ্ছে সবার সর্দার। সবাইকে সংঘটিত করেছেন তিনি। তাদের ডাকাতি করার নির্দেশ দিয়েছেন আনসার মেম্বার। আনসার মেম্বারকে অন্যতম পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত করছি।
একটি চক্র মাছ লুট করে বাঁশখালীতে নিয়ে আসার পর আরেকটি চক্র মাছ বিক্রি করার দায়িত্ব পালন করে। বাঁশখালীতে চোরাই মাছ বিক্রি চক্রের কয়েকজন সদস্য রয়েছে। আরেক চক্রের কাজ হচ্ছে লুটের মাছ কম দামে কেনা। সেই চক্রটিকেও বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

অভিযানের বর্ণনা দিয়ে র‌্যাব-৭ অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, গত ২৭ আগস্ট চট্টগ্রামে সাগরে ৯টি মাছ ধরার নৌকায় ডাকাতি হলে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে নিয়ে র‌্যাব তদন্ত শুরু করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব বিশেষ সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে যে, একটি নৌকা দিয়ে সাগরে বিভিন্ন নৌকায় ডাকাতি করা হচ্ছে।

এ তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭ এর দুইটি আভিযানিক দল ও র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখার একটি আভিযানিক দলের সমন্বয়ে গভীর সমুদ্রে গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু করে দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টার অভিযান চালানো হয়। এ সময় দস্যুতার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ১২ জলদস্যুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে আনসারের ছেলে আনোয়ারও রয়েছেন। তারা সমুদ্রে বিভিন্ন নৌকায় ডাকাতির কথা স্বীকার করেছেন।

জলদস্যুদের কাছ থেকে একটি বোট, তিন হাজার পিস ইলিশ মাছ, মাছ ধরার জাল, তিনটি ওয়ান শুটারগান, একটি চাইনিজ কুড়াল, ১৬টি দা ও ছুরি, একটি বাইনোকুলার, চারটি টর্চ লাইট, দুটি চার্জ লাইট, দুটি হ্যান্ড মাইক, ৭০টি মোবাইল ফোন, নগদ ৫ হাজার ৭০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

আনোয়ারের বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় তিনটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে জলদস্যুতা, সন্ত্রাসী, ডাকাতি, দুর্র্ধষ চাঁদাবাজি, হত্যাচেষ্টা এবং অপহরণকারী সংক্রান্তে একাধিক মামলা রয়েছে। আনসার মেম্বার পালিয়ে গেছেন, তাকে অচিরেই গ্রেফতার করা হবে।