ফ্যাশন হাউসগুলোতে বাড়ছে কেনাকাটা

হুমাইরা তাজরিন »

পবিত্র মাহে রমজানের শুরুতেই কেনাকাটার ব্যস্ততা শুরু হয়ে গেছে নগরীর বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসগুলোতে। এবার ১০ থেকে ১৫ দিন আগে থেকেই তারা ঈদের বিশেষ বিপণন শুরু করে দিয়েছে। শুরুতে শিশুদের জামা-কাপড়ই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে জানাচ্ছে ফ্যাশন হাউসগুলো।

দেশের অন্যতম ফ্যাশন হাউস আড়ংয়ের ষোলশহর আউটলেট ঘুরে দেখা যায়, রমজানের আগে থেকেই সেখানে ক্রেতাদের ভিড়। সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছাড়াও খোলার দিনেও লোক সমাগম বেশি। আউটলেটে বিভিন্ন জোনে ভিড় করছেন ক্রেতারা তবে রমজানকে সামনে রেখে শুরুতে শিশুদের জামা-কাপড়ের চাহিদাই বেশি দেখা যাচ্ছে। শিশুদের সাথে নিয়ে অভিভাবকরা আসছেন সেখানে। আড়ংয়ের কিড্স জোন, যেখানে রয়েছে নবজাতক হতে বিভিন্ন বয়সী শিশু-কিশোরদের টি-শার্ট, শার্ট-প্যান্ট, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, ফ্রক, স্কার্ট, সেলোয়ার-কামিজ, ইত্যাদি পোশাক। এগুলোর দাম রাখা হয়েছে ৪শ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যেই । এছাড়াও আছে শিশুদের জুতা। শিশুদের জামা-কাপড় ছাড়াও পুরুষদের পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট-প্যান্ট, জুতা, শাড়ি , সেলোয়ার- কামিজ ,ঘাগড়া, কুর্তি ইত্যাদিরও চাহিদা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পুরুষদের পাঞ্জাবিগুলো বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১৫হাজার টাকার মধ্যে। নারীদের শাড়ি বিক্রি হচ্ছে ১হাজার থেকে ৩০ হাজার মধ্যে। এছাড়া এবার জুতার দাম রাখা হচ্ছে ১২শ থেকে আড়াই হাজার টাকার মধ্যে। নারী ও পুরুষদের পোশাক মিলছে ‘তাগা’, ‘তাগা ম্যান’ জোনে। যার মধ্যে ‘তাগাকে’ সাজানো হয়েছে নারীদের শাড়ি সেলোয়ার-কামিজসহ অন্যান্য পোশাক। যেখানে নকশীকাঁথা, মসলিন, হাফসিল্ক, ব্র্যাক সিল্ক ও জামদানিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।। ‘তাগা ম্যানকে’ সাজানো হয়েছে পুরুষদের পাঞ্জাবি, শার্ট-প্যান্ট, জিন্সসহ অন্যান্য পোশাক দ্বারা যেখানে সুতি, এক্সক্লুসিভ ও এন্ডি কাপড়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। ‘আড়ং আর্থ’ নামে আড়ংয়ের সৌজন্যে ষোলশহর আউটলেটে থাকছে বিভিন্ন হারবাল পণ্য।

এছাড়া এবারের ঈদে নগরবাসীর জন্য রয়েছে আড়ংয়ের উপহার ‘হার স্টোরি’ নামের নারীদের পোশাকসমূহের বিশেষ সেগমেন্ট। বাংলাদেশের মাত্র ৩টি আউলেটে ‘হার স্টোরির’ দেখা মিলছে। যার মধ্যে নগরীর ষোলশহর আউটলেট একটি। অন্য দুটি হলো ধানমন্ডি ও গুলশান আউটলেট। ‘হার স্টোরিতে’ নারীদের শাড়ি, সেলোয়ার-কামিজগুলো ডিজাইন করা হয়েছে পিওর সিল্ক এবং মসলিন কাপড়ের উপর। এসব পোশাকের দাম রাখা হচ্ছে ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজরের মধ্যে। এছাড়া রমজানের মধ্যেই পালিত হবে বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। যার জন্য আড়ং রেখেছে ‘বৈশাখ ১৯৩০’ নামে একটি আলাদা জোন। যেখানে নারীদের জন্য সুতির শাড়িকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বৈশাখের মটিফের এই শাড়িগুলোর দাম রাখা হচ্ছে ১হাজার থেকে ৫হাজার টাকার মধ্যে। এছাড়াও থাকছে পোশাকের সাথে মানানসই বিভিন্ন সাজ-সজ্জার পণ্য; তবে সেসবের কেনাকাটায় এখনই তেমন সমাগম দেখা যায়নি। তবে জামা-কাপড়ের পাশাপাশি ঘর সাজানোর বিভিন্ন পণ্যও কেনাকাটা করছে ক্রেতারা।

আড়ংয়ে কেনাকাটা করতে আসা ফারহানা মোস্তফা লিজা নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘শুরুতে বাচ্চাদের পোশাকগুলো কিনে নিচ্ছি। কেননা আমার ছেলেমেয়ে ছাড়াও অন্যদের বাচ্চাদের উপহার দিবো। ওদের সাইজ মিলিয়ে নিতে সময়ের দরকার হয়। এখানে ( আড়ং) সুবিধা হলো ডিজাইন, টেক্সচার, কাপড়ের মান ভালো হয়। তাছাড়া সাইজের গড়মিল হলে এক্সচেইঞ্জ করে নেওয়া যায়। নিজেদের কাপড় রমজান শুরু হলে কিনবো। ছেলেদের পাঞ্জাবিগুলো মধ্য রমজানে ভালো পাওয়া যায়। এরপর সব কেনাকাটা হয়ে গেলে অর্নামেন্টস পোশাকের সাথে মিলিয়ে শেষের দিকে নেবো।’

আড়ংয়ের ষোলশহর আউটলেটের ব্যবস্থাপক সারাবিন তহুরা কংকন বলেন,‘ ৮ মার্চ থেকে আমরা ঈদের পণ্যসমূহ বিক্রয় শুরু করেছি। এরপর থেকেই ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করছি। শুরুতে বাচ্চাদের জামা-কাপড়গুলোর চাহিদা বেশি। আমাদের বিশেষত্ব হলো, আমাদের ডিজাইনগুলো ইউনিক হয়। কেননা একটা ডিজাইনের পণ্য একবারই আমরা লঞ্চ করি। সেটি দ্বিতীয়বার রিপিট হয়না। তাছাড়া আড়ংয়ের পণ্যগুলো সবসময়ই মান অনুযায়ী দাম রাখা হয়। ঈদ উপলক্ষে আলাদা দাম বাড়ানোর আমাদের কোনো পলিসি নেই।’