প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ করা হবে : মেয়র

উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে কাউন্সিলরদের তদারকি দরকার

সিডিএ ও চসিক একসঙ্গে
কাজ করলে পার্কিং ও নালা
সংক্রান্ত বিশৃঙ্খলা নিরসন হবে

ট্রাফিক বিভাগকে ফুটপাত
ও সড়ক দখলমুক্ত করার
আহ্বান কাউন্সিলরদের

উন্নয়নের সুফল তৃণমূলে নিতে কার্যক্রমগুলোর বাস্তবায়নে কাউন্সিলরদের তদারকি করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।

গতকাল মঙ্গলবার নগরীর থিয়েটার ইন্সটিটিউটে চসিকের ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ৩৪তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আড়াই হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে চট্টগ্রামের যোগাযোগ অবকাঠামোকে ঢেলে সাজাচ্ছেন। এছাড়া, জলাবদ্ধতা নিরসনে ব্যয় হচ্ছে ১০ হাজার কোটি টাকা।
‘তবে, এ প্রকল্পগুলোর সুফল তৃণমূলের জনগণের কাছে নিয়ে যেতে স্থানীয় পর্যায়ে কাউন্সিলরদের তদারকি করতে হবে। কোন প্রকল্পের কাজ যাতে নিম্নমানের না হয় সে বিষয়ে কাউন্সিলরদের নজর রাখতে হবে।
ওয়ার্ডে হেলথ কমপ্লেক্সেগুলোতে সেবা পাওয়া যাচ্ছে কীনা তা দেখতে হবে।

চসিক জেনারেল হাসপাতালকে ডেডিকেটেড শিশু হাসপাতাল করা যায় কী না সে বিষয়টি আমার বিবেচনায় আছে। যেহেতু পাশেই একটি মাতৃসদন হাসপাতাল আছে, একটি বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল চট্টগ্রামবাসীর জন্য অনেক সুফল বয়ে আনবে।
প্রতিটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ গড়ে তোলা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে খেলার মাঠ করতে চাই। হালিশহর, চান্দগাঁওসহ বেশ কিছু এলাকায় ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকা খাস জমি চিহ্নিত করে সেগুলোতে শিশুদের খেলার ব্যবস্থা করা হবে। কাউন্সিলররা এ বিষয়ে উদাসীন হলে চলবে না। কারণ, এ মাঠগুলো হলে অভিভাবকরা স্বস্তি পাবেন।

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তিভিত্তিক আধুনিকায়ন প্রয়োজন মন্তব্য করে মেয়র বলেন, বর্তমানে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় আমরা অনেকটাই শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। সম্প্রতি ফিনল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, সুইডেনে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম দেখেছি। আমার মনে হয় যেভাবে দ্রুত জনগণ বাড়ছে আমাদের শুধু শ্রমের উপর নির্ভর না করে প্রযুক্তির ওপরও জোর দিতে হবে। আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ধীরে ধীরে ভূগর্ভস্থ এসটিএস, নতুন ল্যান্ডফিল তৈরি, সংগৃহীত বর্জ্যরে পরিবেশসম্মত ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা বাড়াতে হবে চসিককে। শুষ্ক মৌসুমেই আমরা নালা থেকে মাটি তোলা শুরু করেছি। বর্ষার আগেই নালার মাটি অপসারণ করা গেলে পরবর্তী বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা কমবে পাশাপাশি জলপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকলে মশাও কমবে। মশক নিধন কার্যক্রম ঠিকমতো হচ্ছে কী না তা কাউন্সিলরদের তদারকি করতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বিভিন্ন ওয়ার্ডে সড়কের নামকরণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা অমল মিত্রর নামে সড়কের নামকরণের একটি প্রস্তাব এসেছে, একে আমি সাধুবাদ জানাই। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আমার নৈতিক দায়িত্ব আগামী প্রজন্মের জন্য মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন রেখে যাওয়া। বিভিন্ন ওয়ার্ডে যে লেইন-বাইলেইন আছে সেগুলো মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদদের নামে নামকরণ করে তাতে সংক্ষিপ্ত জীবনী সংবলিত পাথরের ফলক স্থাপন করা হবে।

সভায় একাধিক কাউন্সিলর ট্রাফিক বিভাগকে ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করা এবং ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানালে ট্রাফিক বিভাগের এডিসি মো. কাজী হুমায়ুন রশীদ বলেন, হকারদের উঠিয়ে দিলেও তারা আবারও বসে যায়। এজন্য হলিডে মার্কেট চালু করা প্রয়োজন। কাউন্সিলররা সংশ্লিষ্ট থানার ওসির সাথে সমন্বিত পদক্ষেপ নিলে ফুটপাত ও সড়ক দখলমুক্ত করা এবং ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। বিশেষ করে রিকশাগুলোর চার্জিং পয়েন্টগুলোতে যদি অভিযান চালিয়ে বন্ধ করা যায় তাহলে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণে আসবে। বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে সড়ক দখল করা হকারদের উচ্ছেদ করা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, ফয়’স লেক এলাকাসহ পর্যটন ও বিনোদন এলাকাগুলোতে হকারদের উচ্ছেদ করা হবে। হলিডে মার্কেট চালু করে হকারদের শৃঙ্খলায় আনা হবে।

সিডিএ ও চসিক একসঙ্গে কাজ করলে পার্কিং ও নালা সংক্রান্ত বিদ্যমান বিশৃঙ্খলা নিরসন হবে। চসিক ও সিডিএ’কে একত্রে শহরের রাস্তাগুলো প্রশস্ত করার ব্যাপারে কাজ করতে হবে।
সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়রবৃন্দ, কাউন্সিলরগণ চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি