নব আনন্দে জাগো বাংলাদেশ

পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ। বছরের প্রথম দিন। নতুন স্বপ্ন ও নতুন আশা নিয়ে এলো নতুন বছর।
দিনটি ছিল নতুন ফসল ঘরে তোলার। শাসকের দরবারে খাজনা শোধ করে তাঁর কাছ থেকে উপহার পাওয়ার। সেখান থেকে এল ব্যবসার হালখাতা।
‘হাল’ শব্দটি সংস্কৃত ও ফারসি, দু’টি ভাষাতেই পাওয়া যায়। সংস্কৃত ‘হল’ শব্দের অর্থ লাঙল। তার থেকে বাংলায় এসেছে হাল। আর ফারসি ‘হাল’ মানে নতুন।
পহেলা বৈশাখে সে কালে নববর্ষ পালনের উৎসব হত না, এটি ছিল ব্যবসায়ীদের নতুন খাতা খোলার দিন। আর এই সময় রাজা, মহারাজ, সম্রাটরা প্রজাদের কাছ থেকে কৃষিজমির খাজনা আদায় করতেন।
ভারতে মোগল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরি পঞ্জিকা অনুসারে কৃষিপণ্যের খাজনা আদায় করতেন। হিজরি সন গণনা করা হত চাঁদের হিসেবে। আর চাষবাস নির্ভর করত সৌরবছরের উপর। এতে অসময়ে কৃষকদের খাজনা দিতে হত। সেই জন্যে সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। প্রথমে এই সনের নাম ছিল ‘ফসলি সন’, পরে বঙ্গাব্দ বা বাংলা বর্ষ নামে পরিচিত হয়। আকবরের আমল থেকেই পহেলা বৈশাখ উদ্‌যাপন শুরু হয়।
পরবর্তীতে পহেলা বৈশাখের সঙ্গে জড়িয়ে পরে রাজনৈতিক তাৎপর্যও। ১৯৬৭ সালে ছায়ানটই বাঙালি সংস্কৃতিকে নির্মমভাবে দমন করার প্রতিবাদে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর উৎসবটি দেশের জনগণের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও পরিচয়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে।
নতুন বছরে নব আনন্দে জাগো বাংলাদেশ।
সবার মঙ্গল হোক।
শুভ নববর্ষ।