নতুন ৩০ শয্যার আইসিইউ ওয়ার্ডের উদ্বোধন

আজ প্রি-একনেকে উঠছে চমেক বার্ন ইউনিট প্রকল্প

সুপ্রভাত ডেস্ক »
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ১৫০ শয্যার বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাক্তার সামন্ত লাল সেন জানিয়েছেন, রোববার (২৮ জানুয়ারি) প্রি-একনেক সভায় এ সংক্রান্ত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) পাস হবে। এরপর দ্রুততম সময়ের মধ্যে বার্ন ইউনিট স্থাপনের কাজ শুরু হবে।
চমেক হাসপাতালে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপনে গত বছরের ১৩ মার্চ বাংলাদেশ ও চীন সরকারের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। এরপর গত দশ মাসে ইউনিট স্থাপনের জন্য ডিপিপি তৈরিসহ চূড়ান্ত প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
শনিবার চমেক হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাজ অনেকটা গুছিয়ে নিয়ে এসেছি। কাল (রোববার) একটা প্রি-একনেক মিটিং হবে। সেখানে আমাদের ডিপিপি পাস হয়ে যাবে। আমার চাইনিজদের সঙ্গে সবসময় যোগাযোগ আছে। ডিপিপিটা পাস হলেই আমরা দ্রুত কাজ শুরু করবো। ডিপিপি পাস হলেই আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব, যেন দ্রুত আমরা ১৫০ বেডের কাজটা শুরু করতে পারি।’
‘বার্ন ইউনিট নিয়ে আমি অনেকদিন ধরে যুদ্ধ করে আসছি। আমি এই মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র। এটি আমার স্বপ্ন, এখানে যেন একটা বার্ন ইউনিট হয়। এটি হলে এখানকার অনেক মানুষের উপকার হবে। এখান থেকে অনেক রোগী ঢাকায় যায়, পথেই অনেকে মারা যায়। এখানে একটা আইসিইউ হবে, এইচডিইউ হবে, সবই হবে।’
গত বছরের মার্চে চীনের একটি প্রতিনিধি দল চমেক হাসপাতাল পরিদর্শনে এসেছিল। সেসময় প্রতিনিধি দল ও চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, বার্ন ইউনিটটিতে ২টি আধুনিক অপারেশন থিয়েটার থাকবে, ১০টি নিবিড় পরিচর্যা ইউনিট (আইসিইউ) শয্যা এবং ২৫টি উচ্চ নির্ভরশীল ইউনিট (এইচডিইউ) শয্যা থাকবে। খবর সারাবাংলা।
চীনা সরকার হাসপাতালের অবকাঠামো নির্মাণ করবে এবং পোড়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য সব আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহ করবে এবং ইউনিটটি চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করবে।
৫০ বছর আগে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে চিকিৎসাবিদ্যায় স্নাতক সম্পন্ন করেছিলেন সামন্তলাল সেন, সেই চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে শনিবার আসেন তিনি। স্বাস্থ্যমন্ত্রী সকালে হাসপাতালে গিয়ে প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর হাসপাতালে নতুন ৩০ শয্যার আইসিইউ ওয়ার্ডের উদ্বোধন করেন। এছাড়া হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের জন্য প্রস্তাবিত জায়গা, নির্মাণাধীন ক্যানসার-কিডনি ও হৃদরোগ ভবন, ভেনম রিসার্চ সেন্টার পরিদর্শন করেন। এছাড়া মন্ত্রী চমেক হাসপাতাল প্রশাসন, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এরপর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেন, ‘চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ চমেক আমাকে ডাক্তার বানিয়েছে, আমাকে এখানে আসার সুযোগ করে দিয়েছে। আজ এখানে এসে আমি খুব গৌরবান্বিত বোধ করছি।’
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রী হিসেবে দু’টো দায়িত্বকে আমি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তৃণমূল পর্যায়ে চিকিৎসাটাকে উন্নত করতে হবে, এটা আমার প্রথম দায়িত্ব। কিন্তু চিকিৎসকদেরও সুরক্ষা দিতে হবে। রোগী মারা গেলে কথায় কথায় ভাঙচুর, চিকিৎসকদের ওপর হামলা- সেটি আমি কঠোরভাবে দেখব। আবার চিকিৎসকরাও যেন দায়িত্বে কোনো ধরনের অবহেলা না করেন সেটিও দেখব।’
গ্রামের হাসপাতালে চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকেরা কেন থাকেন না, সেটিও শুনতে হবে। দু’পক্ষের কথাই শুনতে হবে। থাকার পরিবেশটা তো তৈরি করতে হবে। থাকতে হবে, কিন্তু তাকে আগে থাকার মতো পরিবেশ, সুরক্ষাটা দিতে হবে। এরপরও যদি না থাকে, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চমেক হাসপাতালে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি প্রায়ই অচল থাকার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি মাত্র এসেছি। এখনও গুছিয়ে উঠতে পারিনি। মেডিক্যালের পরিচালক মহোদয় আছেন, সচিব মহোদয় আছেন, ডিজি আছেন, সবার সঙ্গে আমি কথা বলব। সমস্যাটা কোথায় সেটা দেখে একটা সিদ্ধান্ত নেব।’