নগরের সড়কে মৃত্যু বিভীষিকা

স্ত্রীর চোখের সামনে স্বামী-সন্তানের নিথর দেহ

নিজস্ব প্রতিবেদক »

লালখান বাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী-স্ত্রী মৃত্যুর রেশ না কাটতেই বন্দরটিলা এলাকায় আবারও সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে বাবা ও সন্তানের। তবে এবার চোখের সামনেই ঘটে যাওয়া সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী-সন্তানের নিথর দেহ দেখে পাগল প্রায় মুনিরা আক্তার পলি।

গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ইপিজেড থানাধীন বন্দরটিলা আলী শাহ প্লাজা মার্কেটের সামনে এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আবু সালেহ সিকদার বরগুনা জেলার পাথরঘাটা থানার পূর্ব গোটাবাছা গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে বন্দরটিলা আকমল আলী রোডে বসবাস করতেন।

জানা গেছে, শনিবার পরিবার নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে যাওয়ার সময় লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে পোশাক শ্রমিক আবু সালেহ সিকদার (৩৮) ও তার পাঁচ বছর বয়সী সন্তান আব্দুল মোমিনের মৃত্যু হয়। এসময় রিকশা থেকে ছিটকে অল্প আঘাতে বেঁচে যায় চার বছরের সন্তান আব্দুল মাহিত ও স্ত্রী মুনিরা আক্তার পলি (৩০)।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, চারজন আরোহীসহ রিকশাটি যাচ্ছিল। বন্দরটিলা আলী শাহ প্লাজা মার্কেটের সামনে আসতেই রিকশাটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় কনটেইনার ট্রান্সপোর্টেশন সার্ভিস লিমিটেড কোম্পানির লরি। এতে রিকশায় থাকা লোকটি এবং তার কোলে থাকা শিশুটি রিকশা থেকে ছিটকে পড়ে লরির চাকার নিচে পিষ্ট হয়। এতে তাদের মাথার উপর দিয়ে লরিটি চলে যায়। বিপরীত পাশে ছিটকে পড়ে রিকশায় থাকা মহিলাটি ও তার কোলে থাকা অন্য শিশুটি। এতে তারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হন। এ ঘটনায় আশপাশে থাকা মানুষজন ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়িটি ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করেন।

ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবিরুল ইসলাম সুপ্রভাতকে বলেন, ‘পরিবার নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে যাওয়ার পথে লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে পিতা-পুত্রের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত হন স্ত্রীসহ অন্য এক সন্তান। এ ঘটনায় লরির চালককে আটক ও গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আটক চালকের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইনে মামলা হয়েছে।’

উল্লেখ্য, তিনদিন আগে বুধবার নগরীর লালখান বাজার আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের সামনে ট্রাকের চাপায় নিহত হন জ্যাক মেশিনারি কোম্পানির সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ইকবাল উদ্দিন চৌধুরী ও তার স্ত্রী নগরীর মোস্তফা-হাকিম স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা অন্তঃসত্ত্বা সখিনা ফাতেমী।