দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির আশা অস্ট্রেলীয় হাইকমিশনারের

ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়

বাংলাদেশে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার জেরেমি ব্রুয়ার বলেন- স্বাধীনতা পরবর্তী থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তার দেশ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছে। তিনি আগামী বছর দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে হাই কমিশনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে বলে সভায় অবহিত করেন। হাই কমিশনার কোভিড-১৯ মহামারির কারণে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যে ছন্দপতন ঘটেছে বলে মন্তব্য করে আগামী দিনগুলোতে অধিকতর বাণিজ্য বৃদ্ধি ও সম্পর্কোন্নয়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেইমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট (টিফা) চুক্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন- এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাসমূহ দূরীকরণে কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।
জেরেমি ব্রুয়ার দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি ও করোনাকালীন বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
গত ১০ অক্টোবর সন্ধ্যায় নগরীর একটি হোটেলে চট্টগ্রামের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং গ্রুপের সাথে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম ও সিনিয়র সহসভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন, চট্টগ্রাম ে মেট্রোপলিটন চেম্বারের প্রথম সহসভাপতি শওকত আলী চৌধুরী, বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী, আবুল খায়ের গ্রুপের পরিচালক শাহ শফিকুল ইসলাম, সান শাইন গ্রামার স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রিন্সিপাল সাফিয়া রহমান, হাই কমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি ডানকান ম্যাককালা ও কমিশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম দু’দেশের মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অস্ট্রেলিয়ান সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি উভয় দেশের মধ্যে প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছেনি বলে মন্তব্য করেন। মাহবুবুল আলম পিপল টু পিপল সম্পর্কোন্নয়নের উপর গুরুত্বারোপ করে বৃহত্তর চট্টগ্রামে সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো বিশেষ করে বে-টার্মিনাল নির্মাণ শেষে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এবং ব্যবসায়ীদের কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস হ্রাস পাবে বলে হাই কমিশনারকে অবহিত করেন।
চেম্বার সভাপতি বৈশ্বিক পণ্যমূল্য বৃদ্ধির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অস্ট্রেলিয়া হতে আমদানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে লজিস্টিক্স সাপোর্ট আরো বাড়ানোর অনুরোধ জানান। তিনি বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরে অস্ট্রেলিয়ান ইকোনমিক জোন স্থাপন এবং বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন। মাহবুবুল আলম চট্টগ্রাম চেম্বারের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ সেন্টার অব এক্সিলেন্স সম্পর্কে অবহিত করে অস্ট্রেলিয়ান স্ট্যান্ডার্ড কারিগরি ট্রেনিং সেন্টার এবং যৌথ রিসার্চ কার্যক্রম গ্রহণের অনুরোধ জানান।
তিনি আগামী বছর উভয় দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন চিটাগং চেম্বার এবং হাই কমিশন যৌথভাবে চট্টগ্রামে করারও আহ্বান জানান।
চট্টগ্রাম চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে উভয়দেশের বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আরো বেশি একসাথে কাজ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নে অস্ট্রেলিয়ান বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন। তিনি কোভিডজনিত কারণে জাহাজভাড়া বৃদ্ধি, নতুন কোন জাহাজ ও কন্টেইনার তৈরি হচ্ছে না উল্লেখ করেন এবং দেশের অবকাঠামো, টেলিযোগাযোগ, জ্বালানি, ব্লু-ইকোনমিতে অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা কামনা করেন। বিজ্ঞপ্তি