দোহাজারীতে মাটির স্তুপে পানিবন্দি ২০ হাজার মানুষ

পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিনিধি, চন্দনাইশ :

রেললাইন প্রকল্পের কাজের জন্য রাখা মাটির কারণে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে চন্দনাইশ উপজেলার  দোহাজারী পৌরসভার জামিজুরি এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ। ডুবে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল পৌরসভার ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাড়ি-ঘর, মৎস্য প্রজেক্ট, মুরগির খামার,  ডেইরি ফার্ম, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এমন পরিস্থিতিতে রেহাই  পেতে দীর্ঘ তিন ঘণ্টা মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। দ্রুততর সময়ের মধ্যে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে প্রয়োজনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান  ঘেরাও কর্মসূচির হুমকি  দেয়। গতকাল সোমবার দোহাজারী-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের জামিজুরি এলাকায় নির্মাণাধীন ব্রিজের সামনে তারা এ মানববন্ধন করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অদূরদর্শিতার কারণে প্রায় ২০ হাজার পরিবার এখন পানিবন্দি। ডুবে যাওয়ার শঙ্কায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাড়ি-ঘর, রাস্তাঘাট,  ডেইরি ফার্ম, মৎস্য প্রজেক্ট। তারা বলেন, আমরা উন্নয়ন কাজের বিরোধী নয়। আমরা চাই পরিকল্পিত উন্নয়ন। মাটির স্তুপ করার আগে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্টদের আশপাশের মানুষের সুবিধা অসুবিধা বিবেচনা করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তারা  সেটি না করায় এখন আমরা পানিবন্দি। স্থানীয় শিক্ষক রুপস চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও ইরফান উদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আবুল কাশেম  লেদু ফাউন্ডেশনের  চেয়ারম্যান আলহাজ্ব  মো.  লোকমান হাকিম, উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক নবাব আলী, সাবেক  চেয়ারম্যান আবদুল্লা আল  নোমান  বেগ, প্রধান শিক্ষক বিষ্ণুযশা চক্রবর্তী, সাংবাদিক আবিদুর রহমান বাবুল, ব্যবসায়ী  নেতা কাজী হাছান, আবছার উদ্দিন, আলাউদ্দিন, নুরুল ইসলাম, নাদের  হোসেন, ফারুক প্রমুখ।

এ ব্যাপারে  যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কন্সট্রাকশন এন্ড  কোম্পানি লিমিটেডের ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ার আতিকুর রহমান সাংবাদিকদেরকে বলেন, জামিজুরী এলাকার বিদ্যমান  ছোট কালভার্টটির স্থলে বড় ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ  নেয়া হয়েছে। ব্রিজ নির্মাণের আগে কিছু ট্রিটমেন্ট করতে হয় যাকে সারচার্জ বলে। মাটি ¯ুÍপ করে তা কতটুকু স্যাটেল হয়  সেটি তিনমাস পর্যবেক্ষণে রাখতে হয়। স্থানীয়  লোকজনের সমস্যা বিবেচনায় পানি নিষ্কাশনের জন্য ইতিমধ্যে দুটি পাইপ বসানো হয়েছে। সারচার্জ পিরিয়ড  শেষ না হওয়া পর্যন্ত  সেখানে স্তুপকৃত মাটি সরানোর সুযোগ  নেই। দীর্ঘস্থায়ী সুফল  ভোগের জন্য এলাকাবাসীকে সাময়িক দুর্ভোগ  মেনে  নেয়ারও অনুরোধ জানান তিনি। দোহাজারী-কক্সবাজার-ঘুনধুম  রেলপথ নির্মাণকাজের প্রকল্প পরিচালক  মো. মফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন,  যে  কোন উন্নয়নকাজ জনগণের কল্যাণের জন্য করা হয়।  রেললাইনের ব্রিজ বন্ধ করার ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির বিষয়টি আমাকে  কেউ অবহিত করেনি। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা  দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।