দুর্গন্ধময় স্থান হলো নার্সারি

সুপ্রভাতের প্রতিবেদন

হুমাইরা তাজরিন

দীর্ঘদিন ধরে নগরীর অন্যতম নান্দনিক এলাকা জামালখান মোড়ের প্রতীকি পদ্মাসেতুর নিচে চলছিলো অবাধে শৌচকার্য। মারাত্মক দুর্গন্ধ সত্ত্বেও এই পথ দিয়ে দম আটকে হাঁটতে বাধ্য হচ্ছিলেন পথচারীরা। এ নিয়ে চলতি বছরের ১৩ জুলাই সুপ্রভাত বাংলাদেশ পত্রিকায় ‘শৌচাগার থাকার পরও রাস্তায় শৌচকার্য’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে ১৫ অক্টোবর এই দুর্গন্ধময় জায়গাটিতে পরিষ্কার করে সেখানে ‘শেখ রাসেল স্মৃতি নার্সারি’ গড়ে তোলা হয়।

পথচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আগে জামালখানের সেন্ট মেরিস স্কুলের পাশ ধরে চলাচলের সময় রাস্তার সাথে ফুটপাতের এই অংশ খালি ছিলো। মানুষজন এই দিক দিয়ে চলাচল করতো। তখন কেউ এখানে শৌচকার্য করতো না। ফলে দুর্গন্ধও হতো না। কিন্তু ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে জামালখান মোড়ের এই স্থানে প্রতীকি পদ্মাসেতু স্থাপিত হলে জায়গাটার বেশ কিছু অংশ আড়ালে চলে যায়। অসচেতন পথচারীরা রাস্তার ঐ পাড়ে শৌচাগার থাকার পরও এই আড়ালকেই শৌচকার্যের জন্য বেছে নেয়। ধীরে ধীরে এখানে শৌচকার্য করার বিষয়টা যেন একটা নিয়মে পরিণত হয়। এ পথ দিয়ে চলাচলকারীরা এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করেন। তাদের মতে , নাকে রুমাল চেপে বা দম আটকে প্রতিদিন জায়গাটি পার হতে হতো ।

গতকাল রোববার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দুর্গন্ধ বা ময়লা আবর্জনার ছিঁটে ফোঁটাও নেই। রঙ-বেরঙের ফুল এবং সবুজ গাছপালায় ভরে গেছে জামালখানের মোড়ের পাশে প্রতীকী পদ্মাসেতুর আশপাশের জায়গাটি। এই সব ফুল এবং গাছপালাকে সুসজ্জিত করেছে ‘ শেখ রাসেল স্মৃতি নার্সারি’ নামে একটি নার্সারি। ফুল ছাড়াও নার্সারিতে রয়েছে ফলের গাছ ,সবজির গাছ, বনজ গাছ এবং ঔষধি গাছ। এছাড়াও রয়েছে নানা রঙের ফুলের টব।

নার্সারির বিক্রেতা সাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি ১৫ অক্টোবর। মূলত কাউন্সিলর (জামালখান ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন) সাহেবই এই উদ্যোগটি নিয়েছেন। কেননা দীর্ঘদিন ধরে এখানে লোকজন শৌচকার্য করতো। দুর্গন্ধ হতো। নার্সারির গাছে এখানে আর জায়গা অবশিষ্ট নাই। ফুল গাছ, ফলের গাছ, সবজি গাছ, বনজ গাছ, ঔষধি গাছ ,সার ও ফুলের টবসহ প্রয়োজনীয় সবকিছুই রেখেছি। ক্রেতারাও ভালো সাড়া দিচ্ছেন। ’

শহিদুল আলম নামের এক পথচারী বলেন,‘ এতো দুর্গন্ধ। মেনে নেওয়া যেতো না। নিঃশ্বাস বন্ধ করেই হাঁটতাম। গাড়িগুলো থামেও এখানে; তাই বাধ্য হয়ে এখানে নামতে হয়, দাঁড়াতে হয়। এতোদিন পর একটা সুন্দর সমাধান হলো দেখে বেশ ভালো লাগছে।’
বিষয়টি নিয়ে কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমনকে ফোন করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।