দুদকের মামলায় প্রদীপের জামিন নামঞ্জুর

নিজস্ব প্রতিবেদক :

দুদকের দায়ের করা মামলায় টেকনাফ  থানার ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশের জামিন আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। গতকাল রোববার দুপুরে শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমান এ আদেশ  দেন।

গত ২৩ আগস্ট প্রায় ৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের আইনজীবী মাহমদুল হক মাহমুদ জানান, শুনানি শেষে আদালত প্রদীপের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। চিকিৎসা ও কারাগারে সাক্ষাতের বিষয়ে তার পক্ষে করা আবেদনে কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুদকের মামলায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রদীপকে গ্রেফতার দেখায় আদালত। ওইদিনই তার আইনজীবী প্রদীপের জামিনের আবেদন করা হলে ২০ সেপ্টেম্বর (রোববার) দিন ধার্য করেছিলেন আদালত।

জানা গেছে, দুদকের করা ওই মামলায় প্রদীপের স্ত্রী চুমকি কারণও আসামি। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যাকা-ে গ্রেফতার হয়ে প্রদীপ কারাবন্দি হওয়ার পর  থেকে তার স্ত্রী চুমকি কারণ পলাতক আছেন।

আদালত সূত্র জানায়, গত ২৩ আগস্ট দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বাদি হয়ে প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রদীপের বাবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) একজন নিরাপত্তা প্রহরী ছিলেন। ১৯৯৫ সালে এসআই পদে  যোগদান করেন প্রদীপ। ২০০২ সাল  থেকে তার সম্পদগুলো দৃশ্যমান হতে থাকে। নগরের পাথরঘাটা এলাকায় চুমকি কারণ তার বাবার কাছ থেকে একটি ছয়তলা বাড়ি দানপত্রমূলে পেয়েছেন বলে সম্পদ বিবরণীতে জমা  দেন। কিন্তু চুমকির দুই ভাই ও আরেক  বোন বাবার কাছ থেকে কোনো বাড়ি পাননি। তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। এতে বোঝা যায়, প্রদীপ ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ওই বাড়িটি করেছেন। কাগজপত্র তার শ্বশুরের নামে রাখেন। পরে শ্বশুরের কাছ থেকে দানপত্রমূলে নিবন্ধন করে নেন ২০১৩ সালে। ওসি প্রদীপের সব সম্পত্তিই তার স্ত্রী চুমকি কারণের নামে। চুমকি কারণ গৃহিণী। তার বিশ্বাসযোগ্য জ্ঞাত আয়ের উৎসই নেই। চুমকি কারণের নামে ৪ কোটি ৪৪ লাখ ১৮ হাজার ৮৬৯ টাকার সম্পদ থাকার প্রমাণ পেয়েছে দুদক। এর মধ্যে তিনি পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে খরচ করেছেন ২১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।

চুমকি কারণের পূর্বের সঞ্চয়, উপহার, বাড়িভাড়া থেকে বৈধ আয় হিসেবে ৪৯ লাখ ১৩ হাজার ২৩৪ টাকার সম্পদ পাওয়া যায়। বৈধ আয় বাদ দিলে চুমকির নামে  মোট ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার অবৈধ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। এটা তার জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে সম্পদ ক্রয় করে স্ত্রীর নামে রেখেছেন প্রদীপ। দুদকের করা মামলাটি তদন্ত করছে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন।