তিন সপ্তাহ পর দৈনিক মৃত্যু ষাটের নিচে নামল

সুপ্রভাত ডেস্ক <<
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কঠিন সময়টা পার করে নতুন সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও কমে আসতে শুরু করেছে; তিন সপ্তাহ পর দেশে এক দিনে ষাট জনের কম মৃত্যুর খবর দিয়েছে সরকার।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত এক দিনে আরও ৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে; সংক্রমণ ধরা পড়েছে আরও ২ হাজার ১৭৭ জনের মধ্যে। খবর বিডিনিউজের।
সর্বশেষ এরচেয়ে কম মৃত্যুর খবর এসেছিল গত ৫ এপ্রিল; সেদিন ৫২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর গত ২৫ দিনে কখনো তা ষাটের নিচে নামেনি।
এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে টানা চার দিন মৃত্যুর সংখ্যা ছিল একশর ওপরে; সে সময় ১৯ এপ্রিল দেশে রেকর্ড ১১২ জনের মৃত্যুর খবর জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গতকাল শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫৭ জনের মৃত্যু হওয়ায় দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা ১১ হাজার ৪৫০ জনে পৌঁছেছে। আর নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭ লাখ ৫৯ হাজার ১৩২ জন হয়েছে।
সরকারি হিসাবে আক্রান্তদের মধ্যে আরও ৪ হাজার ৩২৫ জন গত এক দিনে সেরে উঠেছেন। সব মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৮১ হাজার ৪২৬ জন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ; তা সাড়ে সাত লাখ পেরিয়ে যায় গত ২৭ এপ্রিল। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ২৫ এপ্রিল তা ১১ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ১৫ কোটি ছাড়িয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৩১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি মানুষের।
জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৪১৯টি ল্যাবে ২১ হাজার ৪৬টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৫৪ লাখ ৬৯ হাজার ৭০৪টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫১ শতাংশ।
এ পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৪০ লাখ ৩৯ হাজার ৫৬টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৪৮টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৩২ জন পুরুষ আর নারী ২৫ জন। তাদের ৩৭ জন সরকারি হাসপাতালে, ১৮ জন বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। দুজনকে হাসপাতালে মৃত আনা হয়েছিল।
তাদের মধ্যে ৩৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর, ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর, এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।
মৃতদের মধ্যে ৪২৮ জন ঢাকা বিভাগের, ১৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫ জন খুলনা বিভাগের, ২ জন বরিশাল বিভাগের, ৫ জন সিলেট বিভাগের এবং ১ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ১১ হাজার ৪৫০ জনের মধ্যে আট হাজার ৩৫৩ জনই পুরুষ এবং তিন হাজার ৯৭ জন নারী।