ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার বেশি বাংলাদেশে

আক্রান্তের সংখ্যা ব্রাজিলে বেশি হলেও ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশে বেশি। চিকিৎসাদানকারী আন্তর্জাতিক সংগঠন ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস, ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন ইসিডিসির সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ব্রাজিলের পর দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেশি। দেশটিতে এ বছর ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৭৭ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে মারা গেছেন ৪২৪ জন। মৃত্যুহার শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।
আর্জেন্টিনাতে ১ লাখ ২২ হাজার ৬০৭ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে, এর মধ্যে মারা গেছেন ৬৫ জন। দেশটিতে মৃত্যুহার শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। বলিভিয়াতে মৃত্যুর সংখ্যা আর্জেন্টিনার চেয়ে বেশি। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ৯৩৮ জন, মারা গেছেন ৮৩ জন। মৃত্যুহার শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ।
ভারতের ন্যাশনাল সেন্টার ফর ভেক্টর বর্ন ডিজিজেস কন্ট্রোলের তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে ৯৪ হাজার ১৯৮ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছেন ৯১ জন। প্রতিবেশী দেশটিতে ডেঙ্গুতে মৃত্যুহার শূন্য দশমিক ১ শতাংশ।
বিশ্বের সব দেশের তুলনায় ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। দেশটিতে মারা গেছেন ৯২০ জন। মৃত্যুহার শূন্য দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। সরকারের হিসাব বলছে, বাংলাদেশে মৃত্যুহার শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ দুই শ রোগীর মধ্যে একজনের মৃত্যু হচ্ছে।
ডেঙ্গুতে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি মৃত্যু বিশ্বের আর কোনো দেশে দেখা যাচ্ছে না। বৈশ্বিক পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা যায় চলতি বছর একমাত্র বাংলাদেশেই ডেঙ্গুতে মৃত্যু হাজার ছাড়িয়েছে। আইইডিসিআর পরামর্শক ও জনস্বাস্থ্যবিদ মুশতাক হোসেন পত্রিকাকে বলেন, সমস্যা এই যে বাংলাদেশে ডেঙ্গু মৌসুম এখনো শেষ হয়নি, কিন্তু অনেক দেশে মৌসুম শেষ হয়েছে।
দক্ষিণ আমেরিকার কয়েকটি দেশে বরাবরের মতো এ বছরও ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। ইসিডিসি ২ অক্টোবর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু সংক্রমণ হয়েছে এমন যে ১০টি দেশের তালিকা প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে ৭টিই দক্ষিণ আমেরিকার। এর মধ্যে আছে ব্রাজিল, পেরু, বলিভিয়া, আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, নিকারুগুয়া ও কলম্বিয়া। তালিকার বাকি তিনটি দেশ এশিয়ার। বাংলাদেশ, ভারত ও ফিলিপাইন।
কথা হলো প্রতিবেশী দেশ ভারত যদি মৃত্যুহার শূন্য দশমিক এক শতাংশে রাখতে পারে তাহলে বাংলাদেশ পারছে না কেন? গলদটা কোথায়? প্রতিদিন সংবাদপত্রে দেশের সেবাদানকারী সংস্থা সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোর ব্যর্থতা ও দায়িত্বহীনতার খবর পাই। তাতে বুঝতে সমস্যা হয় না আসলে গলদটা কোথায়। সে সঙ্গে জনগণেররও যে করণীয় আছে সে কথা ভুললে চলবে না। আমরা নিজেরা যদি সচেতন হতাম, নিজেদের রক্ষায় নিজেরা এগিয়ে আসতাম তাহলেও পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতো।