জননেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের জন্মদিন আজ

৮১ তে পা রাখলেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম মিরসরাই উপজেলার ধুম গ্রামে ১৯৪৩ সালের ১২ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন আওয়ামী লীগের বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করে ১৯৬২ সালে তিনি স্যার আশুতোষ কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৬৬ সালে লাহোর ইঞ্জিনিয়ারিং ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক (বিএসসি) করা অবস্থায় ছয়দফা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। সেই সময়ে বিভিন্ন মিছিল-সমাবেশে সরাসরি নেতৃত্ব দেন। একই সময়ে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ লাহোরে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রপরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। শিক্ষাজীবন শেষ করে লাহোর থেকে চট্টগ্রামে ফিরে মানুষের পাশে থাকার ব্রত নিয়ে সম্পৃক্ত হন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে। পাশাপাশি মনোযোগ দেন পৈতৃক ব্যবসায়। এরপর তিনি জড়িয়ে পড়েন স্বাধীনতা আন্দোলনে। নানা চড়াই-উৎরাই পাড়ি দিয়ে আওয়ামী লীগ রাজনীতির মধ্য দিয়ে মানুষের পাশে থেকে কাটিয়েছেন জীবনের ৮০টি বছর।

আজ (বৃহস্পতিবার) তাঁর জন্মদিন নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরসহ উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে জেগে উঠেছে আনন্দ উচ্ছ্বাস। আজ তাঁকে নিয়ে নেতাকর্মীদের চাওয়াও অনেক বেশি। সকলে চান তাঁকে যেন প্রধানমন্ত্রী আরও সম্মানিত করুন।
তাঁর জন্মদিন নিয়ে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম এ সালাম সুপ্রভাতকে বলেন, শুধু চট্টগ্রামে নয়, বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগে উনার মতো প্রবীণ, আন্তরিক ও নিবেদিতপ্রাণ নেতা আর নেই। উনি বঙ্গবন্ধুর যেমন স্নেহভাজন ছিলেন, তেমনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীরও আস্থাভাজন। আমরা উনার দীর্ঘায়ু ও নিরোগ জীবন কামনা করি। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ আমাদের অভিভাবক হয়ে যতদিন পাশে আছেন, ততদিন আমরা নিশ্চিন্ত।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল সুপ্রভাতকে বলেন, উনার ৮১তম জন্মদিন উদযাপন নিয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। তিনি আমাদের চট্টগ্রামের একমাত্র বয়োজ্যেষ্ঠ অভিভাবক। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ আওয়ামী রাজনীতিতে অত্যন্ত নিবেদিত। আমরা চাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেন উনাকে এই ৮১তম জন্মদিনে আরও সম্মানিত করেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালে তিনি সর্বপ্রথম তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়াও ১৯৭২ সালের সংবিধান প্রণেতাদের একজন ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। রাজনৈতিক জীবনে তিনি ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় হুইপ ছিলেন। ১৯৮০ ও ৮৪ সালে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯২, ১৯৯৬, ২০০৪ এবং ২০১২ সালে সভাপতি এবং একই সাথে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৫ পরবর্তী বিভিন্ন সরকারের মন্ত্রিপরিষদে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আহবান তিনি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে নিজ দলের আদর্শে অবিচল থাকেন । রাজনীতি করতে এসে মুক্তিযুদ্ধসহ বহুবার তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি হন। নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ১৯৮০, ১৯৮৮ ও ১৯৯২ সালের ঘটনা উল্লেখযোগ্য। ১৯৮০ সালে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট চত্বরে তৎকালীন বিএনপির সশস্ত্র সন্ত্রাসী কর্তৃক তিনি হামলার শিকার হন। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাঁর পায়ের রগ কেটে দেয়। ১৯৮৮ সালে ২৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনার মিছিলে পুলিশ কর্তৃক গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করার ঘটনায় তিনিও মারাত্মকভাবে আহত হন। ১৯৯২ সালের ৮ মে ফটিকছড়িতে সশস্ত্র জামায়াত ক্যাডারদের আক্রমণে গুরুতর আহত হয়ে অলৈাকিকভাবে তিনি প্রাণে বেঁচে যান। ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালে তিনি গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।