চসিকের সঙ্গে সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয় চান মেয়র

উন্নয়ন কার্যক্রম

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সঙ্গে অন্যান্য সেবা সংস্থাগুলোর উন্নয়ন কার্যক্রমের সমন্বয় অতীব দরকার। তা না হলে চলমান কার্যক্রমের সুফল হুমকিতে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। গতকাল মঙ্গলবার চসিকের নির্বাচিত ৬ষ্ঠ পরিষদের ২৫তম সাধারণ সভায় মেয়র এ মন্তব্য করেন।

সভাপতির বক্তব্যে মেয়র বলেন, মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী চসিকের ইতিহাসের সর্বোচ্চ আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছেন। এই প্রকল্পসহ চলমান প্রকল্পগুলো শেষ হলে চট্টগ্রামের বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। তবে সেবা সংস্থাগুলো চসিকের সাথে সমন্বয় না করলে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমের সুফল হুমকির মুখে পড়তে পারে।

মেয়র বলেন, ওয়াসা চলমান স্যুয়ারেজ প্রকল্পের জন্য রাস্তা কাটবে। এতে অনুমতি নেয়া দরকার। শুধু ওয়াসা নয় যে কোন সংস্থা রাস্তা কাটার আগে চসিক থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে এবং যথাযথ প্রাক্কলনের মাধ্যমে চসিকের পাওনা বুঝিয়ে দিতে হবে। সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদের সঙ্গে সমন্বয় করে রাস্তা কাটতে হবে। আমরা রাস্তা বানাবো আর কোন সংস্থা রাতের আঁধারে নতুন রাস্তা কেটে ফেলবে এমন কোন অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মেয়র বলেন, চসিকের স্থায়ী কার্যালয় না থাকায় নাগরিক সেবা প্রদানে সমস্যা হচ্ছে। তাই চসিকের নিজস্ব ফান্ডে স্থায়ী কার্যালয় নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রকল্প কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার স্বার্থে একজন ঠিকাদারকে এক টেন্ডার নোটিশে একাধিক কাজ দেয়া হবে না। আর যেসব ঠিকাদার ঠিকমতো কাজ করতে পারবে না তাদের কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। অনৈতিক কার্যক্রমে জড়িত ঠিকাদারদের ছাড় দেয়া হবে না। কর্মকর্তাদের মধ্যে কারো গাফিলতির জন্য জনদুর্ভোগ হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সভায় প্যানেল মেয়র ও কাউন্সিলরসহ চসিকের কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।

তাদের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে মেয়র বলেন, নগরীকে পরিচ্ছন্ন করার জন্য বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। রাজস্ব আয় যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে প্রাধিকারের ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সড়ক ও ওয়ার্ড কার্যালয়গুলো সংস্কার করা হবে। বিশ^ব্যাংক থেকে ২৭৫ কোটি টাকার কোভিড রেসপন্সের অর্থকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে আমাদের।

মেয়র আরও বলেন- কেবল বস্তুগত উন্নয়ন নয়, সার্বিক উন্নয়নের জন্য সাংস্কৃতিক কার্যক্রমেরও বৃদ্ধি প্রয়োজন। এবার চসিক অন্য বছরগুলোর তুলনায় আরো বড় পরিসর বইমেলার আয়োজন করেছে। মানুষের অবসর সময়কে আনন্দময় করতে প্রতিটি ওয়ার্ডে শিশুপার্ক ও বিনোদনকেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে নান্দনিক নগর গড়ে তোলা হবে।

সভায় মেয়র বলেন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) জলাবদ্ধতা হ্রাসে যে প্রকল্প পরিচালনা করছে, সেখানে রিটের্নিং ওয়ালের কারণে নালা-খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় অনেক এলাকার মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। এ ব্যাপারে সিডিএ চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত হয়েছে তবে সিডিএ থেকে এখনো কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

সভায় চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্যানেল মেয়র, কাউন্সিলরবৃন্দ, সচিব খালেদ মাহমুদ, চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধানগণ এবং নগরীর বিভিন্ন সরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি