‘চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ দরকার’

সুপ্রভাত ডেস্ক »

বাংলাদেশে বিনিয়োগ আসছে না, এ কথাটি সত্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। একইসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ দরকার আছে বলে তিনি মনে করেন।

মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে দৈনিক ইত্তেফাকের আয়োজনে ‘দেশীয় বিনিয়োগে চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে এত বিনিয়োগ আছে যে, আমরা জায়গা করে দিতে পারছি না। অথচ বলা হচ্ছে, বিনিয়োগ আসছে না। এটা পুরোপুরি অসত্য কথা।’ খবর বাংলা ট্রিবিউনের

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ চ্যানেল তৈরি করেছেন। কয়েকদিন আগে আমেরিকার ৩৮টি কোম্পানির সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তারা বলেছে, ঘষিয়াখালী যে চ্যানেলটা আছে, সেখানে তারা স্ট্যাডি করবে। নেভিগেশন লক করার জন্য বিনিয়োগ করবে। এটা আমাদের জন্য একটা বিরাট ব্যাপার, আমেরিকান একটা কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করছে। এই জায়গাটা (সুযোগ) তৈরি করেছে বর্তমান সরকার।’

তিনি বলেন, ‘দেশীয় বিনিয়োগের বিশাল সুযোগ আছে। চট্টগ্রাম বন্দরে ২০০৮ সালের পরে ৪২টি জাহাজ বানানো হয়েছে। জাহাজগুলোর মালিক বাংলাদেশি। এক-একটা জাহাজ ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা ব্যয় করে বানিয়েছেন। তারাই এই ব্যবসাগুলো করছেন।’

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বন্দর নিয়ে আমরা এখন চিন্তায় না, বাস্তবায়নে আছি। এটা সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আমরা অনেকেই জানি না হয়তো। কয়েকদিন আগে আমরা দেশীয় ইয়ার্ডে তৈরি একটা জাহাজ ইংল্যান্ডে রফতানি করেছি। সেটা পাঁচ মিটার বরফ কেটে চলতে পারবে। সুতরাং, এই জায়গায় যদি কেউ বিনিয়োগ করেন, তাহলে আসতে পারেন। কারণ, সেই সক্ষমতা বাংলাদেশের তৈরি হয়েছে।’

চট্টগ্রাম বন্দরের কিছু দুর্বলতা আছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বন্দরে অনেক দুর্বলতা রয়েছে এবং এগুলো আমরা দূর করতে চাই। এখানে আরও বেশি সেবা দিতে চাই।’

নৌ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা কিন্তু দরজা খুলে দিয়েছি। সমুদ্রে যেমন আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে, সীমানা নির্ধারণ হয়েছে, তেমনই আমরা অর্থনীতির দরজাও খুলে দিয়েছি। সেখানে বিনিয়োগ করার সুযোগ রয়েছে। আমরা চাই, দেশি বিনিয়োগের সঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগও আসুক।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা হচ্ছে, সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার এবং এটা শুরু হয়ে গেছে। এখন ২৪ ঘণ্টা বন্দর খোলা থাকে।’
নৌপথের গুরুত্ব উল্লেখ করে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা যদি নৌপথ তৈরি না করি, তাহলে ছয় লেন বলেন, ডাবল রেললাইন বলেন, যা-ই বলেন না কেন, সব জ্যাম লেগে যাবে। একটা ট্রাকে একটা কন্টেইনার আসে,কিন্তু একটা জাহাজে দুইশ’ থেকে তিনশ’ কন্টেইনার আসে। সুতরাং, আমাদের নৌপথ দিয়ে কন্টেইনার নিয়ে আসার কথা ভাবতে হবে।’

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর লাইফলাইন। এটা আমরা আরও কয়েকটা বন্দরে ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরা অভ্যন্তরীণ নৌপথ প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটার টার্গেট নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। যেটা ব্যবসায়ীদের জন্য খুব উপকারী হবে মালামাল যাতায়াতের ক্ষেত্রে।’

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডস অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) সহ-সভাপতি খায়রুল আলম সুজন বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
গ্লোবাল টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ইশতিয়াক রেজার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান, এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক ও পোর্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রধান অঞ্জন শেখর দাশ প্রমুখ।