চট্টগ্রাম দেশের অর্থনৈতিক হৃদপিণ্ড

জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ প্রাপ্তিতে চট্টগ্রামকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
বিদ্যুতের গ্রাহকের বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে ২৮ আগস্ট দুপুরে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম এর প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিমের সাথে তাঁর দফতরে মতবিনিময় করতে গিয়ে এ আহবান জানান সুজন।
এ সময় সুজন বলেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক হৃদপিন্ড। এখানে চট্টগ্রাম বন্দর, কাস্টম, ইপিজেড, জ্বালানি তেল পরিশোধন, সার কারখানা, শিপব্রেকিং, স্টিল ও আয়রন শিল্প, জাহাজ নির্মাণ, পোশাক শিল্পসহ নানাবিধ ভারী, মাঝারি ও ছোট শিল্পকারখানা অবস্থিত।
এসব শিল্পে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ বিদ্যুতের ব্যবহার হয়। চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির উপর বাংলাদেশের অর্থনীতি নির্ভর করে। তাই জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ প্রাপ্তিতে চট্টগ্রামকে অগ্রাধিকার দেওয়া আজ সময়ের দাবী। বিশ^ব্যাপী জ¦ালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সরকার অঞ্চলভিত্তিক বন্ধ, লোডশেডিং, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বৃদ্ধি, আলোকসজ্জা নিয়ন্ত্রণ, বিদ্যুতের ব্যবহার সীমিত করাসহ নানাবিধ পরিকল্পনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে। সরকারের বাস্তবমূখী এসব পদক্ষেপের কারণে বিদ্যুতের সরবরাহ বেড়েছে পাশাপাশি লোডশেডিং আগের চেয়ে নিয়ন্ত্রণে এসেছে সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে এলাকা ভিত্তিক লোডশেডিং করার কথা থাকলেও নির্দেশনা না মেনে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের খবরও পাওয়া যাচ্ছে। তাছাড়া বারবার লোডশেডিংয়ের কারণে গ্রাহকের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্যও নষ্ট হচ্ছে। তাই লোডশেডিংয়ের সময়সূচী আগেভাগে জানিয়ে দেওয়ার আহবান জানান তিনি। তিনি বলেন, প্রিপেইড মিটার স্থাপন বিদ্যুৎ বিভাগের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এ প্রকল্পের ফলে একদিকে গ্রাহক হয়রানি কমেছে অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে। কিন্তু নগরীর প্রায় অধিকাংশ এলাকা প্রিপেইড মিটারের আওতার বাহিরে। ফলত ঐসব এলাকার গ্রাহকগণ গড়বিল নিয়ে ভোগান্তিতে আছেন। গ্রাহকের ভোগান্তি নিরসনে অতিসত্বর পুরো নগরীকে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনার অনুরোধ জানান তিনি।
সুজন বলেন নগরীর হালিশহর, নিউমুরিং ও কালুরঘাট এলাকাগুলো শিল্প অধ্যুষিত এলাকা বিধায় সেখানে বিপুল সংখ্যক শ্রমিক শ্রেণীর বসবাস। এসব এলাকায় রাত্রিকালীন দীর্ঘ সময় ধরে লোডশেডিং এর কারণে গ্রাহকগণ ভোগান্তিতে রয়েছেন। এছাড়া যেসব শপিংমল কিংবা বাণিজ্যিক ভবনে কেন্দ্রীয় শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রয়েছে বর্তমান সময়ে উৎপাদন ব্যবস্থা স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সেখানে কেন্দ্রীয় শীতাতপ ব্যবস্থা বন্ধ রেখে কক্ষ ভিত্তিক শীতাতপ ব্যবস্থা চালু করার আহবান জানান তিনি।
বিউবো’র প্রধান প্রকৌশলী রেজাউল করিম নাগরিক উদ্যোগের নেতৃবৃন্দকে মতবিনিময় করতে আসায় ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। আর বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সবাই জনগণের সেবক। একথা স্বীকার করতে হবে যে প্রধানমন্ত্রীর একক পদক্ষেপের কারণে আজ দেশজুড়ে বিদ্যুতের উৎপাদন অনেকাংশে বেড়েছে। ফলত বিদ্যুতের ব্যাপক চাহিদা বাড়লেও জনগন পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছে। তিনি আগামী বছরের প্রথম দিকেই নগরীতে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন। কিছু ত্রুটিপূর্ণ ব্যাটারির কারণে প্রিপেইড মিটার স্থাপন কাজ বন্ধ থাকলেও বর্তমানে সে সমস্যা নেই বলে জানান তিনি। তিনি নাগরিক উদ্যোগ উত্থাপিত সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের তাৎক্ষণিক নির্দেশনা প্রদান করেন। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী প্রকৌশলী (উত্তর) মাহফুজুর রহমান, সমাজসেবী সৈয়দ আহমেদ কবির, নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছ, আব্দুর রহমান মিয়া, রুহুল আমিন তপন, সাইদুর রহমান চৌধুরী, নিজাম উদ্দিন, সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন, শাহনেওয়াজ আশরাফী, ফয়সাল বাদশা প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি