চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন চলাচল শুরু হোক শীঘ্রই

১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী-কক্সবাজার নতুন রেললাইনের উদ্বোধন করেন। প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল লাইন স্থাপন, কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনসহ বেশ কয়েকটি নতুন স্টেশন নির্মাণসহ আনুষাঙ্গিক অবকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। কিছু কাজ বাকি থাকলেও ট্রেন চলাচল পর্যটনশহর কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। গভীর আগ্রহ ও উদ্দীপনা নিয়ে প্রতিদিন দেশের নানা প্রান্ত থেকে রাজধানী হয়ে প্রচুর পর্যটক আসছেন কক্সবাজারে।
কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী ট্রেন চালু হয়নি এখনো। তবে চালু না হলেও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুরোধে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ একটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের সকালে প্রেস ক্লাব সদস্যদের পরিবারসহ কক্সবাজার নিয়ে যায় একটি বিশেষ ট্রেন। পরদিন একই ট্রেন ফিরতি যাত্রীদের নিয়ে আসে চট্টগ্রামে। ঢাকা-কক্সবাজার ট্রেন একমাসের অধিক আগে চালু হলেও যাত্রাপথে এখনো দেখা গেছে ট্রেনকে ঘিরে সাধারণ মানুষের উচ্ছ্বাস।
বিশ্বে প্রথমবারের মতো রেলওয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল প্রায় দুইশ বছর আগে। ১৮২৫ সালে ইংল্যান্ডে প্রথম ট্রেন চলাচল শুরু করে। ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে নামের কোম্পানি চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে কুষ্টিয়ার জগতি পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে পূর্ব বাংলায় রেলযুগের সূচনা করে প্রায় ১৬০ বছর আগে। ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর এ অঞ্চলে প্রথম রেলের চাকা ঘোরে। ১৮৮৫ সালে চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত রেল চলাচল শুর হয়। বর্তমানে দেশের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় তিন হাজারের বেশি কিলোমিটার রেললাইন রয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত রেল চলাচল করলেও কক্সবাজার অঞ্চলের মানুষ ট্রেন যোগাযোগ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল দীর্ঘ বছর। ওই অঞ্চলে অনেক মানুষ ট্রেনে চড়া তো দূরের কথা, জীবনে ট্রেনও দেখেননি।
বর্তমান সরকারের মেগা প্রকল্পের মধ্যে কক্সবাজার পর্যন্ত রেল যোগাযোগ বিস্তৃত করা অন্যতম। স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশে প্রথম রেলওয়ের সংস্কার ও উন্নয়ন করেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর তাঁর কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রেলের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন।
এখন চট্টগ্রামবাসী অপেক্ষা করছে কবে নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের মধ্যে সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হবে। চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ট্রেনটি পক্ষান্তরে ট্রায়াল হিসেবেও কাজ করেছে। শোনা যাচ্ছে নতুন বছরের প্রথমদিন থেকে এই পথে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। আমরাও প্রত্যাশা করি যথাশীঘ্রই চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে শুধু একটি সরাসরি নয়, অন্যান্য স্টপেজে যাত্রী ওঠানামা করতে পারে এমন ট্রেনও যেন চালু হয়।