চকরিয়ায় শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কোরবানি পশুরহাট

বেড়েছে বেচাকেনা, উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি

নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া গ্ধ
আগামী বুধবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ। আর এই উৎসবকে ঘিরে একেবারে শেষমুর্হুতে জমে উঠেছে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কোরবানি পশুর হাটগুলো।
করোনা সংক্রমণের শুরুতে প্রথমে লকডাউন পরে শিথিল করার ঘোষনার সাথে সাথে উপজেলার হাটগুলোতে স্থানীয় খামারীদের পাশাপাশি প্রতিদিন বিভিন্নস্থান থেকে গাড়ি যোগে কোরবানি পশু তথা গরু মহিষ ছাগল আসতে শুরু করেছে। এতে শেষের কয়েকদিনে বেশ বেচাবিক্রিও বেড়ে চলছে বলে জানিয়েছেন পশুরহাটের একাধিক ইজারাদার।
জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের ঝুঁকি থাকলেও তা উপেক্ষা করে বর্তমানে চকরিয়া উপজেলার ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় প্রশাসনের অনুমোদনপ্রাপ্ত স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে অন্তত ২৫টি কোরবানি পশুর হাটে বেচাকেনা বেশ জমে উঠেছে।
ঈদ ঘনিয়ে আসায় করোনা পরিস্থিতিতেও বেশ জমে উঠেছে চকরিয়া পৌরসভার বাস টার্মিনাল, ঘনশ্যামবাজার, মগবাজার কমিউনিটি সেন্টার মাঠ, উপজেলার ইলিশিয়া জমিলা বেগম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, সাহারবিল পরিষদ বাজার, বদরখালী বাজার, ডুলাহাজারা স্টেশন বাজার, খুটাখালী স্টেশন বাজার, হারবাং স্টেশন বাজার, বেতুয়া বাজার, বরইতলী একতা বাজারসহ অন্তত ২৫টির বেশি কোরবানীর পশুর হাট। প্রতিবারের মতো এবারও সবচেয়ে বড় পশুর হাট বসেছে ইলিশিয়া জমিলা বেগম স্কুল মাঠে। ইজারাদার পক্ষের লোকজন পশুর হাটে আগত ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কে সর্তক করতে মাইকিং করছেন। বলছেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্য বিধি মেনে পশু বেচাকেনা করুন।
তবে উপজেলার বিভিন্ন কোরবানির পশুর হাটে দেখা গেছে, করোনার সুরক্ষা সামগ্রী মাক্স, হেন্ডগ্লাব্স ছাড়াই দুরত্ব না মেনে ক্রেতা-বিক্রেতারা পশু বেচাকেনা করছেন। এতেকরে পশুর হাটগুলোতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরী হয়েছে।
সরেজমিনে কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার বেশিরভাগ কোরবানির পশুর হাটে বেড়েছে ক্রেতা সমাগম। স্থানীয় প্রশাসন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানি পশুর হাটে জনসমাগমের বিধিনিষেধ থাকলেও দৃশ্যত ক্রেতা সাধারণ তা লঙ্ঘন করে চলছেন। পশুর হাটে চলাফেলায় অনেকের নেই শারীরিক দূরত্ব সম্পর্কে কোন ধারণা।
বেশিরভাগ পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে সচেতন করতে ইজারদার পক্ষথেকে মাইকিং করা হলেও মুখে মাস্কবিহীন ভাবে শারীরিক দূরত্ব বিধি লঙ্ঘন করে কোরবানির পশুর হাট বাজারে গুলোতে ঘুরছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। তবে এবারের কোরবানি পশুর হাট-বাজারে একেক একটি মাঝারি সাইজের গরু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা, আর বড় সাইজের গরু বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ থেকে দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
গরুর পাশাপাশি বেচাকেনা হচ্ছে ছাগল ও মহিষ। একেকটি বড় আকারের ছাগল বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকায়। অন্যান্য বাজারের তুলনায় ইলিশিয়া বাজারে এবারও সবচেয়ে বড় সাইজের গরুর দেখা মেলেছে ।
বেশিরভাগ পশুরহাটে প্রশাসনের জারি করা স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করা হলেও হাট পরিচালনায় নিয়োজিত ইজারাদারেরা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গরু ছাগল মহিষ বিক্রি চলছে বলে দাবি করেছেন। আবার অনেকে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মাঝে বিনামুল্যে মাক্সও বিতরণ করছেন বলে জানিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়ে জানতে চাইলে ইলিশিয়া বাজারের প্রধান সমন্বয়ক স্থানীয় পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনা অনুসরণ করে আমরা কোরবানির হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে কাজ করছি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরাও ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের মাঝে বিনামুল্যে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করছেন। চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমন মোকাবিলায় কোরবানি পশুর হাটগুলোতে সবধরণের সুরক্ষামুলক উদ্যোগ নিতে আগে থেকে বাজার ইজারদার সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এখানে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কে সজাগ ও সচেতন হতে হবে। তারপরও প্রশাসনের পক্ষথেকে পশুর হাটগুলোতে নজরদারি করা হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘনের প্রমান পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানাও করা হচ্ছে।