চকবাজার কাঁচাবাজার : রাস্তায় ডাস্টবিন চলাচলে দুর্ভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক »

সপ্তাহখানেক আগে নগরীর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পরিচালিত চকবাজার কাঁচাবাজারের বিপরীতে আবারো বসানো হয়েছে ডাস্টবিন। তবে বসানোর নির্দিষ্ট কোনো জায়গা না থাকায় যান ও পথচারী চলাচলের রাস্তার উপর বসানোর কারণে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। ডাস্টবিনটি বসানোর সময় ওয়ার্ড সংশ্লিষ্ট কেউ উপস্থিত থাকেন না; ফলে গাড়ি চালকেরা যেখানে খুশি সেখানেই বসিয়ে দিচ্ছেন। ডাস্টবিন আর ছড়ানো আবর্জনায় সংকুচিত হয়ে পড়ছে গাড়ি চলার স্থান। আবর্জনার দুর্গন্ধ, যানজটে নাকাল হতে হচ্ছে এলাকার মানুষকে।

সরেজমিন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় দেখা গেছে রাস্তার অর্ধেক অংশ জুড়ে আড়াআড়িভাবে বসানো হয়েছে ডাস্টবিন। ডাস্টবিনের পাশ ঘেঁষেই তীব্র দুর্গন্ধের মধ্যেই নাক হাত দিয়েই চলতে দেখা গেছে পথচারীদের। বিপরীত দিক থেকে আসা যানগুলোকে চলতে হচ্ছে থেমে থেমে ধীরগতিতে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তা ‘ডাস্টবিনের দখলে’ থাকলেও সেগুলো সরানো ও নির্দিষ্ট জায়গায় বসানোর ব্যাপারে ‘উদাসীন’ কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ওয়ার্ড সুপারভাইজারদের এসব বিষয় তদারকি করতে দেখা যায় না। ফোন করলেও তারা ধরেন না। এলাকায় তাদের দেখা মেলে কালেভদ্রে।

এলাকার বাসিন্দ ও চকবাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন ক্ষোভ প্রকাশ করেন করে বলেন, ‘ওয়ার্ড সুপারভাইজার সবুক্তগীন মাহমুদ তায়েছ কারও কথা কানে তুলেন না। নিজের ইচ্ছেমত কাজ করেন। ফোন করলেও তাকে পাওয়া যায় না।’

অভিযোগ বিষয়ে জানতে ওয়ার্ড সুপারভাইজার সবুক্তগীন মাহমুদ তায়েছের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেন নি।

খবর পেয়ে সাড়ে বেলা ১২টায় সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন পরিদর্শক (মশক) নুরুল আলম। তবে তিনি কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই এদিক-ওদিক দেখে পুনরায় ফিরে যান। সন্ধ্যা পর্যন্ত ডাস্টবিনটি যথাস্থানেই ছিল বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

এ বিষয়ে পরিদর্শক (মশক) নুরুল আলম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমি গিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যস্ততার কারণে ডাস্টবিনটি সরানো হয়নি। তবে আজকের পর থেকে এরকম আর হবে না। এ বিষয়ে গাড়ি চালকদেরও বলা হয়েছে। তারা যদি কথা না শুনেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় কি-না, জানতে চাইলে পার্শ্ববতী দোকান মালিক তপন দাশ বলেন, ‘তাও তো বুঝি না, বাজারের ময়লা সারাদিনই পড়তে থাকে ডাস্টবিনে। এছাড়া সুইপাররা আশপাশের আবর্জনা নিয়মিত এখানে ফেলে দিন-রাত। সন্ধ্যা হতে ডাস্টবিন উপচে রাস্তায় আবর্জনার স্তুপ জমে যায়।’

ডাস্টবিনটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসানোর জন্য বেশ কয়েকবার ওয়ার্ড সুপারভাইজারকে বলা হলেও তিনি তাতে ‘কান দেয়নি’ বলে তার অভিযোগ।

এলাকার ব্যবসায়ী মো. আমিন জানালেন, এই একটি জায়গায় সবসময় দুর্ভোগ লেগেই আছে।

পথচারী শামীমা ইসলাম বলেন, ‘আগে ময়লা-আবর্জনা খোলা রাস্তায় পড়ে থাকত। এখন আবর্জনা ডাস্টবিনে পড়ছে ঠিক আছে, রাস্তায় না বসিয়ে ডাস্টবিনটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসানো হলে পথচারীদের চলাচলের দুর্ভোগ কমত।’

এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোরশেদুল আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এলাকাবাসীর অনুরোধে ডাস্টবিনটি সেখানে বসানো হয়েছে। এখানে সমস্যা হচ্ছে ডাস্টবিনগুলো বসায় আমাদের গাড়ি চালকেরা। ওদের নিয়ে আমরা অনেক সমস্যায় আছি। শুধু এখানে নয় অন্য জায়গায়ও এরা অনেক সময় রাস্তার মাঝখানে বসিয়ে দেয়।’ বিষয়টি তিনি দেখবেন বলে জানান।