গহীন পাহাড় থেকে উদ্ধার তিন বনকর্মী

টেকনাফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার ও টেকনাফ প্রতিনিধি

টেকনাফ উপজেলায় অপহরণের শিকার তিন বনকর্মীকে অবশেষে তিনদিন পর উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ ও বন বিভাগের কর্মকর্তারা।
গতকাল সোমবার দুপুর ১টার দিকে টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জোবাইর ও রেঞ্জ কর্মকর্তার নেতৃত্বে হ্নীলা ইউনিয়নের মোচনীর গহীন পাহাড় থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
এর আগে শুক্রবার বিকালে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের মোচনী বিটের নেচার পার্ক বন পাহারা দেওয়ার সময় এই তিন বনকর্মীকে দুর্বৃত্তরা অপহরণ করে গহীন জঙ্গলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তাদের পরিবারের কাছে মুক্তিপণের জন্য ৬০ লাখ টাকা দাবি করে আসছিল দুর্বৃত্তরা। অবশেষে চার দিনের মাথায় তাদেরকে উদ্ধার করা হয়।

এরা হলেন টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের দমদমিয়া এলাকার আবদুল মালেকের ছেলে মো. শাকের (২০), একই এলাকার বকছু মিয়ার ছেলে আবদুর রহমান (৪২) ও আবদু শুক্কুরের ছেলে আবদুর রহিম (৪৬)। তারা তিন জনই একটি বেসরকারি সংস্থার অধীনে বন পাহারাদার ছিলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অপহরণের শিকার একজনের স্বজন বলেন, ‘তাদের জীবিত ফেরত দিতে তিন দিন ধরে অপহরণকারীরা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল। এর ফলে আমরা মুক্তিপণের টাকা সংগ্রহ করতে লোকজনের কাছ থেকে চাঁদা তুলেছি।’ কিন্তু তাদের ফেরত আনতে অপহরণকারীদের টাকা দেওয়ার বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

হ্নীলা ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘চার দিনের মাথায় বন পাহারাদারদের পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও আমরা পাহাড়ে অবস্থান করছি। যদিও এর আগে পরিবারের কাছে ৬০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করে সন্ত্রাসীরা। এরপর থেকে স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের উদ্ধারে পুলিশ পাহাড়ে অভিযান শুরু করে।’
উদ্ধার হওয়া মো. শাকেরের বড় ভাই মো. আয়ুব বলেন, ‘অজ্ঞাত ব্যক্তিরা মোবাইলে ফোন করে আমার কাছে ৬০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল। পুলিশ ও বনবিভাগের সকল কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমাদের ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী তিন দিন ধরে তাদের উদ্ধারের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।’
এ বিষয়ে টেকনাফ বন বিভাগের বিট কর্মকর্তা আবুল কালাম সরকার বলেন, ‘পুলিশ-জনতার সহায়তায় আমাদের অপহৃত তিন বনকর্মীকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরে বিস্তারিত জানানো হবে।’

টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জোবাইর সৈয়দ বলেন, ‘অপহৃত বনকর্মীদের পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অপহরণকারীরা মুক্তিপণ আদায় করছে কিনা সেটি আমার জানা নেই’।
উল্লেখ্য স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সাড়ে আট মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ৮৬ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৪২ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকি ৪৪ জন রোহিঙ্গা। অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৩৯ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে।